ঢাকা: খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে অন্তর্বর্তী সরকারের ধীর পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শিক্ষার্থীদের প্রতি সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ‘ধীর পদক্ষেপ’কে অবহেলার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর রূপায়ণ টাওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই কথা জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল ও বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ হামলা চালায়। হামলায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
কিন্তু এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ না করলেও, আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৭ জন নিজ দলের কর্মী থাকার কথা বলেছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরে এই ধরনের আচরণ আমরা বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে লক্ষ্য করেছি।
এনসিপির এ নেতা আরও বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে হামলার সময় উপাচার্যকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তারও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদে অধিকার সকলের রয়েছে, তবে শিক্ষকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, দুই মাস আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কুয়েট শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদান করলেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, যা চরম দায়িত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ। আগামীকাল ইউজিসির একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিনে পরিদর্শনে কুয়েটে যাবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এবিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ধীর পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলার বহিঃপ্রকাশ, যা হতাশাজনক বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, এনসিপি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানায়, অনতিবিলম্বে কুয়েটে চলমান অচলাবস্থা নিরসন করে হল খুলে দেয়া হোক। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে আমরা কুয়েটের ভিসি মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। সার্বিক বিষয়ে ইউজিসির নেতৃত্বে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, নিজাম উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন শিশির, সাইফ মোস্তাফিজ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এফএইচ/এসএএইচ