ঢাকা, শুক্রবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৬ মে ২০২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

সাম্য হত্যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: রিজভী 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৭, মে ১৫, ২০২৫
সাম্য হত্যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: রিজভী  বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।  

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমানে পুরো দেশ অশান্তিতে ভরে উঠেছে। অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। আপনারা সেদিকে না তাকিয়েই কি নিজেদের মতো দেশ চালাবেন? পতন হয়ে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও তাদের মদত দেওয়ার অনেক শক্তি রয়েছে এবং দিচ্ছে। সুতরাং ডানে-বামে সবদিকে তাকিয়ে যথাযথভাবে দেশ শাসন করুন। না হলে কেউ রক্ষা পাবে না। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে আপনাদের কিন্তু জনগণ ধরে ফেলবে।

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর মানুষ একটু স্বস্তিতে থাকতে চেয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক-ছাত্ররা নির্বিঘ্নে ক্লাসে যাওয়া-আসা করবে, এটাই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এখন কেন ক্যাম্পাসে এই অরাজক পরিস্থিতি? কেন একজন তরুণ ছাত্রের লাশ ক্যাম্পাসের মাটিতে! যারা এখন ক্ষমতায় আছেন, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করা বিরোধী দলগুলো তাদের সমর্থন করেছে। তাহলে এখন কেন লাশ পড়বে? গত পরশুদিন রাত ১২টার দিকে ছাত্রদল নেতা সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।

সাম্য কী অন্যায় করেছিল, এমন প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘আমার তো মনে হয় এখানে রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনজন ভবঘুরে কেন সাম্যকে হত্যা করবে? কয়েকদিন আগে ফেসবুকে শাহবাগে জাতীয় সংগীত বন্ধের জন্য একটা আন্দোলন চলছিল। তার বিরুদ্ধে এবং জাতীয় সংগীতের পক্ষে একটি পোস্ট করেছিল। এটাই কি সেই কারণ?’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদী আমলে পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আবরারকে হত্যা করা হয়। আজকে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, ’৭১ এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললে তার জীবন চলে যায়। অর্থাৎ দেশের পক্ষে যারা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, যারা জাতীয় সংগীতের পক্ষে তাদের জীবন চলে যায়। আমি এজন্যই বলেছি, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে। ’

পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনারা ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখুন। ভবঘুরেদের গ্রেপ্তার করেছেন, মানুষ এসব বিষয় সহজভাবে নেয় না। মানুষ সহজভাবে নিত যদি সবসময় সত্য এবং ন্যায় অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নিত। কিন্তু সেটা তারা নেয়নি। যেমন আবরার হত্যাকাণ্ডে নেয়নি, তেমনি আরও ঘটনাতেও নেয়নি। আজকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাসিনা নেই, দোসররা নেই, রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তোফাজ্জল নামে একজনকেও হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পাস হবে শান্তির স্থান, এখানে থাকবে শান্তির পতাকা। সেখানে কেন রক্তপাত হবে? এটা তো হওয়ার কথা নয়। ’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন সেটা আমরা জানি না। আপনাদেরকে আমরা সমর্থন করেছি, এখনো করে যাচ্ছি। কিন্তু এনসিপি যখন যমুনার দিকে যায়, তখন তাদেরকে সাদরে বরণ করেন। তিন-চারদিন আগে দেখলাম আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা গেলেন, তাদের সাদরে বরণ করলেন। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা তাদের আবাসনের জন্য গেল, তখন আপনারা তাদের উপহার দিলেন লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ডগ্রেনেড। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে আপনারা রয়েছেন। আপনারা তো সুশীল সমাজের লোক। কিন্তু আপনাদের আচরণের মধ্যে এই দ্বিচারিতা কেন? আপনাদের আচরণের মধ্যে এই বিভাজন কেন?’

মানববন্ধনে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের বিভিন্ন স্তরের নেতারা বক্তব্য দেন।

ইএসএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।