ঢাকা: গ্রিসের এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগম আমন্ত্রিত অতিথিদের এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা, গ্রিসস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা, কূটনীতিকরা, এথেন্স সিটি কাউন্সেলর, গ্রিক ডিপ্লোমেট লাইফ ম্যাগাজিনের সম্পাদক, গ্রিক ছাত্র-ছাত্রী, ওয়েবস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ আরও অনেকে।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বাংলা নববর্ষের চেতনায় সাম্য, সম্প্রীতি এবং মানবতার জয়গান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির অন্যতম বৃহত্তম অসাম্প্রদায়িক উৎসব, যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত করে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ বির্নিমাণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি সদ্য প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অংশে ছিল নানা রকম পরিবেশনা। এতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা ও দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের সম্মিলিত পরিবেশনায় গাওয়া হয় বর্ষবরণের জনপ্রিয় গান ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। এ ছাড়া শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে এক মনোমুগ্ধকর ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণ করে দূতাবস পরিবারের সদস্য আজরিন, মিম, সাব্বির, আয়ামিন, সাজিয়া, হামজা এবং রাফিফ। ছোট্ট শিশু সোবা মনি আরজুকা এবং সামিয়া রহমান মিম আবৃত্তি করে বৈশাখী আবহে রচিত কবিতা।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি পরিবেশনা মঞ্চস্থ করে আয়ামিন, শান, সাজিয়া, হামজা ও রাফি। মিজ কুররাতুল আইন শাম্মী একক সংগীত পরিবেশন করেন। পল্লী বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুথি পাঠ পরিবেশন করেন সাইফুজ্জামান, হাফিজুর রহমান এবং আহমেদ শরিফ।
অনুষ্ঠানের শেষভাগে ‘দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন’র উন্মুক্ত পরিবেশনার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী এবং উপস্থিত সবাইকে সংগীতে মাতিয়ে তোলে। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এথেন্সের বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে নববর্ষের উৎসব পরিণত হয় মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দূতাবাসসহ মোট পাঁচটি স্টল প্রদর্শিত হয়। এসব স্টলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা-কাপড়সহ নানান ধরনের বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের আয়োজন করা হয়। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাসের স্টলে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার, দেশীয় পণ্য ও আকর্ষণীয় মেহেদী কর্নারের আয়োজন ছিল, যা দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ দূতাবাস, এথেন্স বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করতে এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
টিআর/এএটি