ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

বেশি পিপাসা লাগলে ঘন ঘন কুলি করা যাবে কি-না?

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৮
বেশি পিপাসা লাগলে ঘন ঘন কুলি করা যাবে কি-না? অপার মহিমার রমজান।

অপার মহিমার মাস রমজান। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠনের এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজান মাসকে সঠিকভাবে পালনে করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে জানার থাকে মুসল্লিদের।

এজন্য মাহে রমজানে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। এই আয়োজনের মাধ্যমে ([email protected] ঠিকানায় ইমেইল করে) পাঠক তার রমজান বিষয়ক প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন উত্তর।

পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে পাঠকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেবেন বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী।

প্রশ্নকর্তা: এনামুল হক, ফেনী।

প্রশ্ন: রোজায় সহবাসের বিধান কী?

উত্তর: এক: কেউ যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে রমজানের কোনো এক দিবসে একবার বা একাধিকবার সহবাস করেন তবে তার ওপর একবার কাফফারা আদায় করা আবশ্যক হবে; যদি তিনি প্রথমবার

সহবাস করার পর কাফফারা আদায় না করে থাকেন। আর যদি তিনি কয়েকদিন দিবাভাগে সহবাস করে থাকেন তবে তাকে সম সংখ্যক দিনের কাফফারা আদায় করতে হবে।

দুই: এ ক্ষেত্রে শারীরিক মিলনের কাফফারা আদায় করা ফরজ যদিও তিনি এই ব্যাপারে অজ্ঞ থেকে থাকেন।

তিন: সহবাস করার ক্ষেত্রে স্ত্রী যদি স্বামীকে সম্মতি দেয় তাহলে স্ত্রীর ওপরও কাফফারা ফরজ হবে। আর যদি স্বামী জোরপূর্বক স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে তাহলে স্ত্রীর ওপর কোনো কিছু ফরজ হবে না।

চার: খাদ্য খাওয়ানোর বদলে সমমূল্য অর্থ প্রদান করা জায়েজ নয়। খাওয়ানোর পরিবর্তে অর্থ প্রদান করলে এতে ‍অর্পিত দায়িত্ব পালন হবে না।

পাঁচ: একজন মিসকিনকে তার পক্ষ থেকে অর্ধ সা ও তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে অর্ধ সা খাওয়ানো জায়েজ। এতে তাদের দুইজনের পক্ষ থেকে ৬০ জন মিসকিনের একজনকে খাওয়ানো হয়েছে বলে গণ্য হবে।

ছয়: কাফফারার সবগুলো খাদ্য শুধু একজন মিসকিনকে প্রদান করা জায়েজ নয়। অনুরূপভাবে চ্যারিটি বা অন্য কোনো দাতব্য সংস্থাকে প্রদান করাও জায়েজ নয়। কারণ তারা হয়ত ৬০ জন মিসকিনের মাঝে খাদ্য বিতরণ করবে না। মুমিনের উচিত শরিয়ত কর্তৃক তার ওপর আরোপিত কাফফারাসহ সব ওয়াজিব পালনে সচেষ্ট হওয়া। আল্লাহই তাওফিকদাতা। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সাহাবিগণের ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।

(আহসানুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়া দারুল উলুম, ইমদাদুল ফাতাওয়া, বেহেশতি জেওর, মিনহাতুল বারি)

প্রশ্নকর্তা: শাওকত হোসেন, নারায়ণগঞ্জ।

প্রশ্ন: খুব বেশি পিপাসা লাগলে ঘন ঘন কুলি করা যাবে কি না?

উত্তর: রোজার কারণে পিপাসায় কষ্ট হলে সওয়াবও বেশি হবে। এ সময় বেশি অস্থিরতা প্রকাশ করা ঠিক নয়। তদ্রুপ রোজা অবস্থায় ঘন ঘন কুলি করা বা বারবার মুখে পানি দেওয়াও অনুচিত। অবশ্য

এ কারণে গলাতে পানি না গেলে রোজা নষ্ট হবে না।

(মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৩৮; সুনানে আবু দাউদ ৩/১৫৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৬/২৪১; সুনানে আবু দাউদ ৩/১৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৫; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া ৯৯)।

জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৮
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।