ঢাকা, রবিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

কাজিপুর ছিল একটি নিষিদ্ধ ভূমি, ২৫ বছরেও আসতে পারিনি: টুকু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
কাজিপুর ছিল একটি নিষিদ্ধ ভূমি, ২৫ বছরেও আসতে পারিনি: টুকু

সিরাজগঞ্জ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আমি ২৫ বছর কাজিপুরে আসিনি। এর অর্থ এই নয়, কাজিপুরে আসতে চাইলেও আসতে পারতাম।

কাজিপুর ছিল একটি নিষিদ্ধ ভূমি, একটি বিশেষ দলের এবং কিছু বিশেষ মানুষের জন্য। আমরা ওই দল করতাম না, আমাদের কাজিপুরে আসতে দেওয়া হতো না। দীর্ঘকাল পরে এ কাজিপুরে এ জনসভা করতে এসেছি। কাজিপুরে যত মাথা ছিল, তাদের হত্যা করা হয়েছে। ধংস করে দেওয়া হয়েছে। আমার বাবার রাজনীতি শুরু হয়েছিল কাজিপুর দিয়ে। তার কাছের মানুষগুলোকে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জনসভার প্রধান বক্তা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেছেন, শেখ হাসিনা বলতো ভোট কেন দেব? ওই তারেক এসে দেশ চালাইবো এটার জন্য। আবার এখনও এই সরকারের আমলে অনেকেই বলতে চায় ভোট কেন দেব, বিএনপি জিতবে এইটার জন্য। আরে ভাই বিএনপিকে যদি জনগণ ভোট দেয় আপনার এত চুলকায় কেন? আপনারে যদি ভোট না দেন আমরা তো জোর করে দিতে পারবো না। আর বিএনপি জোর করে ভোট নেবে? বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা করেনি, জেলে পুরেনি। বিএনপি ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের জন্য রাজনীতি করে।

আব্দুস সালাম বলেন, এখনো যারা নির্বাচন পেছাতে চান, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই কেন পেছাতে চান? বিএনপিকে মানুষ ভোট দেবে এটার জন্য। আবার বলেন, বিএনপি ভোট পেতে পারে না-এত খারাপ কাজ করছে। তাইলে বিএনপিরে ভয় পায় কেন? বিএনপির জন্ম হয়েছিল এ দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য। বিএনপির জন্ম হয়েছিল আমার ধর্মকে রক্ষা করার জন্য। তাই পরিস্কার বলতে চাই এই দেশের মানুষকে রক্ষা করতে বিএনপির কোনো বিকল্প নেই। এ কারণেই তারা বিএনপিকে ভোট ভয় পায়। তাই পরিস্কার বলতে চাই, আজ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের স্লোগান এখন থেকে হবে ধানের শীষ যার আমরা তার। আগামীতে ধানের শীষকেই বিজীয় করতে হবে, নইলে রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।  

তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছর অঞ্চলে বিএনপির নেতাকর্মীরা কথা বলতে পারেনি। এটাই হলো ফ্যাসিবাদ। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না। এখনো যারা আওয়ামী লীগের জন্য মায়াকান্না কাঁদে, হাসিনার জন্য মায়াকান্না কাঁদেন, তাদেরকে বলতে চাই, হাসিনা তো নিজেই ভাইগ্যা গেছে তাও আবার পেছনের দরজা দিয়ে। যে ভাইগ্যা যায় সে আবার নেতা হয় কীভাবে। বিএনপির আমাদের নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে এ হাসিনা অনেক কথা বলেছিলেন। আজকে হাসিনা কই, আজকে সেই কাদের কই। পালাইচে কাওয়া কাদের, পালাইছে এই এলাকার বিনাভোটের নির্বাচিত এমপিও হয়েছিলেন সেও পালাইছে।  

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ খুনির দল, লুটেরার দল, চোরের দল। ঝাড়ু তৈরি রাখেন ঝাড়ু। মা-বোনেরা ঝাড়ু রাখবেন, আর আপনাদের তো পায়ে চপ্পল আছেই। তারা এত মায়ের বুক খালি করেছে, এই সিরাজগঞ্জেই আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। হাসিনা যদি ফিরে আসতে চায়, যাদের মারছে তাদের ফেরত দিতে হবে, যাদের হাত-পা কাটছে সেগুলোকে ফেরত দিতে হবে। তারপরে না আওয়ামী লীগের সাথে বোঝাপড়া।  

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কন্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।