ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আবারও অস্থির কাঁচা মরিচের বাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৩
আবারও অস্থির কাঁচা মরিচের বাজার

ঢাকা: মাস দুয়েকের ব্যবধানে ফের অস্থির হয়ে উঠেছে কাঁচা মরিচের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইবার বড় ধরনের দামের পরিবর্তন ঘটেছে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির।

সোমবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি ও খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ মানভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই দিন আগেই (শনিবার) একই বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা কেজি দরে।

মাস দুয়েক আগে কোরবানির ঈদের সময় হঠাৎ দেশের বাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়তে থাকে কাঁচা মরিচের। ফলন নষ্ট ও সংকটের অজুহাতে প্রতিদিন বাড়তে থাকা কাঁচা মরিচের দাম এক পর্যায়ে এক হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এতে ধীরে-ধীরে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে এই পণ্যটির দাম। তবে এখন আবার অস্থির হয়ে উঠেছে কাঁচা মরিচের বাজার।

বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে দেশে কাঁচা মরিচের তেমন উৎপাদন না থাকায় এবং টানা বৃষ্টিতে ফলন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমদানি করা কাঁচা মরিচ দিয়েই চাহিদা মেটানো হচ্ছে। ফলে সীমান্ত বন্ধ থাকলেই বেড়ে যায় কাঁচা মরিচের দাম।

কারওয়ান বাজারের খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রেতা রনি বলেন, এখন বাজারে দেশি কাঁচা মরিচ নেই। যা আছে সবই ভারতীয় মরিচ। যার কারণে মাঝে দুইদিন বর্ডার বন্ধ থাকায় মরিচের দাম বেড়েছে। আজকে আবার কমেছে।

আগামীকাল আবার দাম বাড়তে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, দেশি মরিচ বাজারে না আসা পর্যন্ত দামের এই ওঠা-নামা চলতে থাকবে।

মো. ইসলাম নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি ১২০ টাকা দরে। পরশুদিন বিক্রি করেছি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। কাঁচা মরিচের আমদানি কম থাকায় দাম বাড়ছে।

দাম আরো বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাঁচামালের দাম বাড়া বা কমার বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না। সরবরাহ ভালো থাকলে দাম কমবে, সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়বে।

মো. শামসুল আলম নামের এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, গত বুধবার কাঁচা মরিচ কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি করেছি। বর্ডার বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দাম বেড়ে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা হয়। শনিবার আবার দাম কমে যায়।

দাম ওঠানামার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ খুবই কম। ২০ টনের জায়গায় মরিচ আসে ১০ টন। তাই বাজারে কাঁচা মরিচের দাম আমদানির ওপর নির্ভর করে। সীমান্ত বন্ধ থাকলে দাম বেড়ে যায়, খোলা থাকলে আবার কমে যায়।

তবে কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতার জন্য ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও সরকারের তদারকির অভাবকে দায়ী করছেন ক্রেতারা।

মো. মোফিজুল আলম নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লেও সেটার লাভ তো কৃষক পায় না। তার মানে দাম বাড়ায় আমদানিকারক ও পাইকারি বিক্রেতারা। সরকার বাজারে তদারকি করেও তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। বাজারে শুধু কাঁচাম রিচ নয়, প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু আমাদের সাধারণ ক্রেতাদের তো খেতে হবে। তাই কষ্ট হলেও এই বাড়তি দামেই আমাদের কিনতে হবে।

কারওয়ান বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা পরিবহন ব্যবসায়ী কাইয়ুম বলেন, কাঁচা মরিচের দাম একদিন কমে, তো আরেকদিন বাড়ে। কিন্তু যে হারে বাড়ে, সে হারে কমে না। পকেটের টাকা সব এই বাজারেই শেষ হয়ে যায়। আগে যে টাকা সঞ্চয় করতাম, এখন তার সিকিভাগও করতে পারি না। সব বাজারেই দিয়ে আসতে হয়।

এদিকে গত এক সপ্তাহে কমেছে রসুনের দাম। বর্তমানে কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় রসুন ৪০ টাকা কমে ১৮০ টাকা এবং দেশি রসুন ২০ টাকা কমে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি-ব্যবসা এর সর্বশেষ