ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ক্ষোভ নিয়ে বিজেপি ছাড়লেন নেতাজির বংশধর চন্দ্র বসু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
ক্ষোভ নিয়ে বিজেপি ছাড়লেন নেতাজির বংশধর চন্দ্র বসু

কলকাতা: বিজেপি ছাড়লেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য চন্দ্রকুমার বসু। তিনি নেতাজি প্রোপৌত্র।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে একটি চিঠি লিখে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন তিনি। তার কথায়, বিজেপি যে রাজনীতি করে, তার সঙ্গে তার আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে একাধিক বিষয়ে কেন্দ্র তথা পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্বকে একাধিক প্রস্তাব পাঠালেও তাতে দল তেমন আমল করেনি বলেই আক্ষেপ তার।

বুধবার(৬ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দ্র বসু বলেছেন, শরৎচন্দ্র বসু আমার ঠাকুরদা (বাবার বাবা) এবং তার ছোট ছিলেন ভাই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তারাই আমার আদর্শ। তাদের আদর্শেই আমি আদর্শিত। তাদের মধ্য দিয়েই আমি শিখেছি, সব ধর্মের মানুষকে এক করে ভারতীয় করে তোলা। বিভাজনের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে তারাই লড়াই করেছিলেন।

শুধু মতাদর্শগত পার্থক্যই নয়। এদিন (৬ সেপ্টেম্বর) চন্দ্র বসুর গলায় আরও একাধিক বিষয়ে আক্ষেপ ঝরে পড়েছে। নাড্ডাকে পাঠানো চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, মোদির নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। আমি চেয়েছিলাম বিজেপির মাধ্যমে শরৎচন্দ্র বসু ও সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শ সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ুক। তখন ঠিক হয়েছিল বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যেই আজাদ হিন্দ মোর্চা তৈরি হবে। যার মাধ্যমে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত ভারতীয়ের মধ্যে নেতাজির আদর্শ প্রচার করা হবে।

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছনোর জন্য দলের কাছে এই পন্থা (বেঙ্গল স্ট্র্যাটেজি) পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, চন্দ্র বসুর অভিযোগ, এ বিষয়ে একাধিকবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও রকমের সুরাহা পাননি তিনি। শুধু তাই নয়,  তা সম্পূর্ণভাবে অবহেলা করেছে রাজ্য বিজেপিএবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন চন্দ্র বসু। এই মুহূর্তে তিনি বিজেপির কোনও পদে নেই। দলের সঙ্গে দূরত্ব থাকলেও প্রাথমিক সদস্যপদ ছিল।

মঙ্গলবার(৫ সেপ্টম্বর) দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে চিঠি পাঠিয়ে সেই যোগটুকুও ছিন্ন করলেন তিনি। নড্ডার পাশাপাশি চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।

মুলত, চন্দ্র বসুর সঙ্গে বিজেপি বিবাদ প্রায় প্রথম দিন থেকেই। ২০১৮ সালে, টুইটে তিনি লিখেছিলেন, হিন্দুরা খাসীর মাংস খাওয়া বন্ধ করুন। তা নিয়ে বিজেপি নেতা তথাগত রায় টুইটে লিখেছিলেন, ছাগল নয়, গরুই আমাদের মাতা। এছাড়া বিজেপির এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) নীতি নিয়েও বিরূপ মনভাব পোষণ করেছিলেন তিনি। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপি বিষয়টা ভালোভাবে নিতে পারেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
ভিএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।