ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বিজয় দিবসের স্মৃতিচারণে আবেগাপ্লুত পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী শোভনদেব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩
বিজয় দিবসের স্মৃতিচারণে আবেগাপ্লুত পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী শোভনদেব

কলকাতা: একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশের বিজয় আনন্দের ঢেউয়ে দুলেছিল পশ্চিমবঙ্গবাসীও। কলকাতার সড়কে বাংলাদেশের শরণার্থীদের সঙ্গে এখানকার বাঙালিরাও ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করেছিলেন।

সেই দিনটির ৫২ বছর পরেও একই রকম আছেন পশ্চিমবঙ্গবাসী। তারা আছেন অগ্রযাত্রার বাংলাদেশের সঙ্গে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষি এবং সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শনি ও রোববার (১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর) উপকাইকমিশন প্রাঙ্গণে কলকাতার বাঙালিদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় মেহেরিনসহ দুই বাংলার শিল্পীরা গান গেয়ে মুগ্ধতা ছড়ান।

অনুষ্ঠানে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের বিজয়ের সঙ্গে সমগ্র বাঙালি জাতির আবেগ জড়িয়ে আছে। ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায়। যার কারণে বিজয় দিবস শুধু বাংলাদেশের নয়, দিবসটি গোটা বাঙালির।

স্মৃতিচারণ করে পশ্চিমবঙ্গের এ মন্ত্রী আরও বলেন, সেসময় অল ইন্ডিয়া রেডিওর বড় ভূমিকা ছিল। রেডিওতে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবেশনায় বাঙালিদের মধ্যে একটা আবেগ তৈরি হয়েছিল। আমরা সন্ধ্যেবেলা সব কাজ ছেড়ে তখন দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংবাদ শুনতে বসে পড়তাম। ১৯৭৩ সালে বিশ্ব যুব দিবসে যোগ দিতে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জার্মানি গিয়েছিলাম। সেখানেই বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের সঙ্গে আমার আলাপ হয়। খুব অল্প দিনে আমরা দুজনে ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। আজ তিনি নেই। কিন্তু বাংলাদেশ আছে। সে কারণে আমার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অন্তরের।

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে প্রবীণ এ রাজনীতিক আরও বলেন, যেদিন পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেছিল আমি ঠিক তার পরদিন বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। তখনো মুক্তিযোদ্ধারা স্টেনগান নিয়ে রাস্তায় পাহারা দিচ্ছিলেন। তখনো চারিদিকে পড়েছিল অসংখ্য মরদেহ। একদিকে বাঙালির জয়ে মনে আনন্দ, অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের শবদেহ পড়ে থাকতে দেখে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল।

কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, ৫২ বছর পরেও একই রকম আছেন পশ্চিমবঙ্গবাসী। আমাদের বিজয় অনুষ্ঠানে এখানকার মানুষের মধ্যে যে আনন্দ আমি দেখতে পাচ্ছি, তার থেকে প্রমাণ হয় দু’দেশের মধ্যে হৃদয়ের যে বন্ধন আছে তা কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গে বোঝা যায়।

কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দূরদর্শন বাংলার সাবেক প্রধান স্নেহাশিস সুর মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধ শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল না। নিপীড়িত বাঙালি মুক্তি চেয়েছিল পরাধীনতার শেকল এবং বঞ্চনা থেকে। যার পাশে ছিল ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ। ফলে বিজয়ের মাস বা বিজয় দিবস শুধু বাংলাদেশের নয়; ভারত, পশ্চিমবঙ্গ তথা বাঙালির বিজয় দিবস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭  ২০২৩
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।