ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

চিন্ময় ইস্যুতে কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা, পুলিশ আহত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৪
চিন্ময় ইস্যুতে কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা, পুলিশ আহত

কলকাতা: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।  

এ নিয়ে বৃহস্পতিবারও (২৮ নভেম্বর) কলকাতার রাজপথ ছিল উত্তাল।

সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে আহত হলেন কলকাতা পুলিশের এক সদস্য, জ্বালানো হলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুতুল। পোড়ানো হলো বাংলাদেশের পতাকা।

বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও (২৮ নভেম্বর) বেলা গড়াতেই কলকাতা পুলিশ কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন চত্বর। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বুধবার বিজেপি নেতা শুভেন্দুর নেতৃত্বে সাতজন বিধায়ক দেখা করেন কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তবে তা ছিল শৃঙ্খলভাবে।

কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে গেল বৃহস্পতিবার। এদিন বাংলার দক্ষিণ বঙ্গে ১৭টি সংগঠন একজোট হয়েছিল বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ ব্যানারে। তার মধ্যে যেমন ছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস ইত্যাদির মত সংগঠন। আর তাতেই যেনো সব কিছু ছাপিয়ে গেল।

স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশন জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে হাজারের ওপরে সনাতনী মানুষ অংশ নেন। এরপর শিয়ালদহ থেকে মিছিল এগোতে থাকে বেগবাগান চত্বরে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের দিকে। পথে ছিল অসংখ্য পুলিশ।

তবে কলকাতা পুলিশ আগাম অশান্তির খবর পেয়ে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন এলাকার ৫০০ গজ দূর থেকে সমস্ত যানবাহন আটকে দেয়। তাদের বাধা দিতে মোট নয়টি অস্থায়ী ব্যারিকেড গড়ে তোলে সড়কের ওপর। এরপর বেলা সাড়ে ৪টার দিকে বিশাল জমায়েত হামলে পড়ে ব্যারিকেডের দিকে। তখন প্রথম ব্যারিকেড সামাল দিচ্ছিলেন কয়েকজন পুলিশ। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর কাছে অসহায় হয়ে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। তাও শক্ত করে ব্যারিকেড সামাল দিতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

ভিড়ের চাপে মুহূর্তেই ভেঙে যায় ব্যারিকেড। সেই ভিড়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় এক পুলিশ সদস্যকে। চরম আহত হন সেই পুলিশ সদস্য। তারপরই নামানো হয় আরও বড় পুলিশ বাহিনী।

এরপরই দ্বিতীয় ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। পরে পাঁচজনকে মিশনের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ততক্ষণে ওই ভিড়ের মধ্যেই জ্বালানো হয় কুশপুতুল। সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। সন্ধ্যা ৬টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কলকাতা পুলিশ।

বুধবার শুভেন্দুর নেতৃত্ব বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে স্মারক জমা দেন বিজেপির সাতজন বিধায়ক। গতকাল শুভেন্দু বলেছিলেন, আমাদের প্রত্যেক জনের সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি না দিলে আমরা আন্দোলন আরও জোড়ালো করব। আমরা এ কথাই জানাতে এসেছিলাম বাংলাদেশের কর্মকর্তাকে।

তিনি আরও বলেছেন, ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানাব, যেনো ভিসা এখনই চালু না করে। এর পাশাপাশি আমরা আগামী রোববারের মধ্যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি না দিলে সোমবার থেকে পেট্রাপোলে অবরোধ করব। ওই পথ দিয়ে যাতে বাংলাদেশে কোনো পণ্য যেতে না পারে। এই পথ অবরোধ চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। যতদিন ওনাকে মুক্তি দেওয়া না হয়। তবে কোনো যাত্রীবাহী বাস অবরোধ করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন শুভেন্দু।  

জানা যাচ্ছে, আগামী ২ ডিসেম্বর বিপুল কর্মী সমর্থকের জমায়েত হবে পেট্রাপোলে। ফলে সময় যত যাচ্ছে চিন্ময় ইস্যুকে সামনে রেখে আরও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করছে বিজেপি।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৪
ভিএস/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।