কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে জিপলাইনে চড়েছিলেন ঋষি ভট্ট নামে এক পর্যটক। অভিজ্ঞতার স্মৃতি ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন তিনি।
জিপলাইনিং হলো কোনো উঁচু পাহাড় বা গাছ থেকে একটা তার বা দড়ির সাহায্যে ঝুলে নিচে নামা। সোজা কথায় বললে, একটা ঝুলন্ত দড়ির রাস্তায় চড়ে স্লাইড করে যাওয়া। ঋষি ভট্ট নামে ওই পর্যটক যখন ভিডিও করছিলেন, সেটিতে দেখা যায় কালো টি শার্ট পরিহিত ব্যক্তি মাটিতে পড়ে গেছেন। তিনি যখন উঁচু থেকে মাটিতে নামেন, তখন দেখা যায় ছাই রঙা জ্যাকেট পরিহিত এক ব্যক্তি মাটিতে পড়ে আছেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারতের কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁও অঞ্চলের বৈসরন উপত্যকায় বন্দুক হামলার ঘটনাটি ঘটে। সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলেন ঋষি ভট্ট। তার ভিডিওতে আরও কিছু ব্যক্তিতে দৌড়াতে দেখা যায়। যারা দৌড়াচ্ছিলেন, তাদের কারও কারও পরনে স্থানীয় পোশাক ছিল। আবার এমন অনেককে দেখা যায়, তাদের পরনের পোশাক স্থানীয়দের মতো নয়। এতে বোঝা যায়, তারা পর্যটক ছিলেন।
ঋষির যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, তাতে তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে। কিন্তু তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, গুলি ছোড়া শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে তার জিপলাইন যাত্রা শুরু হয়। যখন গুলি চলছিল, তিনি মাঝামাঝি ছিলেন। নিজের অজান্তেই নারকীয় একটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে পড়েন।
হামলার ওই ঘটনায় ২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, হামলাকারীরা ‘পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পোশাক’ পরে ছিল। তাদের হাতে ছিল একে-৪৭ রাইফেল। হামলাটি চালায় ৪ থেকে ৬ জন বন্দুকধারী। এসব তথ্য প্রতিনিয়ত ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় উঠে এলেও স্বাধীনভাবে যাচাই করা নয়। পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পোশাকের ব্যবহার নিয়ে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মকর্তারাও কোনো বক্তব্য দেননি। এমনকি হামলায় একে-৪৭ রাইফেল ব্যবহার হয়েছে, সেটিও তারা শক্ত অবস্থান থেকে বলতে পারেনি।
ঋষির যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেটি ‘ঘর কা কলেশ’ নামে একটি এক্স হ্যান্ডল থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিও দেখে নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, সংশ্লিষ্ট জিপলাইন অপারেটর এই হামলার সঙ্গে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইতিমধ্যেই ওই জিপলাইন অপারেটরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছে।
এমজে