যেকোনো সামরিক উত্তেজনার সময় জড়িত দেশগুলোর অস্ত্রের ভাণ্ডারের দিকে সবার নজর পড়ে। কোন পক্ষের হাতে কত শক্তিশালী মারণাস্ত্র তৈরি আছে, তা নিয়ে শুরু হয় নানা বিশ্লেষণ-গবেষণা।
ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার তৈরি ‘অগ্নি-ফাইভ’কে দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বলা হচ্ছে। এই আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা সাত থেকে আট হাজার কিলোমিটার। এতে কঠিন জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছে। মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রিএন্ট্রি ভেহিকেল প্রযুক্তির কারণে ক্ষেপণাস্ত্রটি একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উড়তে পারে। এর গতি ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এমন উচ্চগতির কারণে অগ্নি-ফাইভকে বিশ্বের দ্রুততম ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয়।
২০১২ সালে অগ্নি-ফাইভ ক্ষেপণাস্ত্রটির সফল পরীক্ষা চালানো হয়। ভারতের মধ্যভাগ থেকে এটি ছোড়া হলে, তা পুরো চীনের যেকোনো অংশে আঘাত হানতে পারবে। রুশ ভুখণ্ডের প্রায় পুরোটাই এবং ইউরোপের সিংহভাগ এলাকা ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লার মধ্যে। বাদ যাচ্ছে না আফ্রিকার পূর্বভাগও। পাকিস্তান, ইরান, মধ্যপ্রাচ্য সবখানেই এটি পৌঁছাতে পারবে। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ এবং পাপুয়া নিউগিনি থেকে শুরু করে চীনের উপকূল এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিকের বিশাল অংশে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে ক্ষেপণাস্ত্রটি দিয়ে আঘাত করা যায়।
১৭ মিটার লম্বা, ৫০ হাজার কেজি ওজনের অগ্নি-ফাইভ এক হাজার ৬৫০ কেজির পেলোড নিয়ে উড়তে পারে। ওড়ার জন্য ক্যানিস্টারাইজড ক্ষেপণাস্ত্রটি সলিড প্রপেল্যান্ট মোটর ব্যবহার করে। এতে ১০ থেকে ১২টি পারমাণবিক ওয়ারহেড যুক্ত করা যায়। প্রায় ৪০০ কেজি ওজনের প্রতিটি ওয়ারহেড শত শত কিলোমিটার দূরে থাকা আলাদা আলাদা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। আবার কয়েকটি ওয়ারহেডকে একটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করানোও সম্ভব।
ভারত ১২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার অগ্নি-সিক্স ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করছে বলে জানা গেছে। দেশটির মোট ১১ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন আছে। অগ্নি-সিক্স ছাড়াও ১৬ হাজার কিলোমিটার পাল্লার সূর্য ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণাধীন আছে বলে জানা যায়।
সূত্র: সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ / মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্ট
এমএইচডি/এমএম