ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শেখ হাসিনার মামলার অগ্রগতি চূড়ান্ত পর্যায়ে: ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
শেখ হাসিনার মামলার অগ্রগতি চূড়ান্ত পর্যায়ে: ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর শেখ হাসিনা

ঢাকা: জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। তবে অন্যান্য আসামিদের মামলার তদন্ত কিছুটা ধীরগতিতে চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।  

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তিকেন্দ্রিক মামলা। এসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং অপরাধ সংগঠনে তাদের ভূমিকা তদন্ত করা হচ্ছে, যা আইনের ভাষায় ‘সুপেরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ হিসেবে পরিচিত।

তিনি বলেন, পাশাপাশি, জুলাই-আগস্টের ঘটনার বিভিন্ন স্থানের ওপর ভিত্তি করে কিছু মামলার তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আশুলিয়া, রামপুরা এবং চানখারপুলসহ বেশ কয়েকটি স্থানের মামলা উল্লেখযোগ্য।

প্রসিকিউটর তামিম বলেন, সুপেরিয়র রেসপন্সিবিলিটির মামলায় যারা গ্রেপ্তার বা পলাতক রয়েছেন, তাদের অনেকেই এরই মধ্যে ঘটনাস্থল কেন্দ্রিক মামলাগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। আর যেসব মামলায় নৃশংসতা বেশি, সেগুলোতে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এ কারণে অন্যান্য মামলার তদন্ত কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। তবে এর মানে এ নয় যে মামলাগুলো থেমে আছে। প্রতিটি মামলার জন্য আলাদা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং তারা পৃথকভাবে তদন্ত পরিচালনা করছেন।

শেখ হাসিনার মামলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, শেখ হাসিনা সব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু। তার নির্দেশেই সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত হলে, সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এ কারণে শেখ হাসিনার মামলা শেষ করে বাকিগুলো এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজকের শুনানির বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, ট্রাইব্যুনালে আজকে কয়েকটি মামলার তারিখ ছিল। জুলাই আগস্টের গণহত্যা মহাখালীতে যে পাঁচজন শহীদ আছে সে ঘটনার নির্ধারিত তারিখ ছিল আজ। এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে তিন মাসের একটি সময়ের আবেদন করা হয়েছিল। সময়টি মঞ্জুর হয়ে আগামী ২০ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়।

প্রসিকিউটর তামিম জানান, অন্যদিকে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় মোহাম্মদপুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় অভিযুক্ত ওমর ফারুক নামে এক আনসার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়েছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, ফারুক বিনা কারণে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আদালত আগামী ২৭ এপ্রিল তদন্ত সংস্থায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানের মামলায় তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডকুমেন্ট সার্চ করে বা সিজ করতে পারে সেগুলো যেন সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভেরিফায়েড করতে পারে সে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সেটি মঞ্জুর করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।