ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শীতের সঙ্গে দুর্ভোগ বেড়েছে শিবচরের চরাঞ্চলে

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
শীতের সঙ্গে দুর্ভোগ বেড়েছে শিবচরের চরাঞ্চলে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে ফসলের ক্ষেত -বাংলানিউজ

মাদারীপুর: গত কয়েকদিন ধরেই মাদারীপুরের পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত নদ-নদীর চরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে এসব এলাকার পথঘাট।

ফলে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চর এলাকার মানুষ। শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সন্ধ্যার পরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় হাট-বাজার, সড়কে কমছে জন সাধারণের চলাচল। এদিকে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্ট পাচ্ছেন চরাঞ্চলের দরিদ্র বাসিন্দারা।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই রাত ১১ টার পর থেকেই ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করে এসব চরাঞ্চলে। কুয়াশার প্রকোপ থাকে সকাল ১০/১১টা পর্যন্ত। ভোরের দিকে কুয়াশার কারণে ঢাকা পড়ছে স্থানীয় সড়ক-মহাসড়ক। যানবাহন চলাচল তাই সকাল থেকেই তুলনামূলক কম থাকছে সড়কে।

এদিকে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের হাট-বাজারে ভোরের দিকে ঠাণ্ডা ও কুয়াশার কারণে ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকে না বললেই চলে। শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগে রয়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগ বাড়ছে বলেও জানা গেছে।

আড়িয়াল খাঁ নদ সংলগ্ন এলাকার ভ্যান চালক মো. সামাদ শেখ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অনেক শীত পড়ছে। ঠাণ্ডার কারণে সকাল এবং বিকেলে ভ্যান চালাতে কষ্ট হয়।

কাঁঠালবাড়ি এলাকার দিনমজুর ইব্রাহিম বলেন, শীতের কারণে মাঠে কাজ করতে কষ্ট হয়। দিনেও অনেক বেলা পর্যন্ত কুয়াশা থাকে। তাছাড়া অনুদান হিসেবে যে কম্বল পাই, তাতে শীত নিবারণ হয় না।

ইজিবাইক চালক রতন বলেন, কুয়াশার কারণে সকালে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত গরম কাপড় পরতে হচ্ছে।

শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে সরকারিভাবে এ পর্যন্ত উপজেলায় ৯ হাজারের মতো কম্বল এসেছে। সেগুলো ১৯ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। শীতবস্ত্রগুলো ইউনিয়ন ভিত্তিক চেয়ারম্যানদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকেও শীতার্থদের শীতবস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার শিরুয়াইল, দত্তপাড়া, নিখলী, কাঁঠালবাড়ী, চর জানাজাত, সন্নাসীরচর, বহেরাতলাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

উপজেলার উৎরাইল এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আশ্রয়ের সাধারণ সম্পাদক মো.শামীম হোসেন বলেন, আমরা সংগঠনটির পক্ষ থেকে স্থানীয় হতদরিদ্র পরিবারে শীতবস্ত্র হিসেবে লেপ বিতরণ করেছি। অন্যান্য বছর কম্বল বিতরণ করেছিলাম। এবছর লেপ দেওয়া হয়েছে।

শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, ভোরে মহাসড়কে প্রচুর কুয়াশা থাকে। ভোরে যানবাহন কম চলাচলের পাশাপাশি হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলে। হাইওয়ের একাধিক স্থানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি ভাবে ৯ হাজারেরও বেশি শীতবস্ত্রের বরাদ্দ রয়েছে এ উপজেলায়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষকে এই শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।