ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন রেলস্টেশনে রাত কাটানো সেই বৃদ্ধ

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩
মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন রেলস্টেশনে রাত কাটানো সেই বৃদ্ধ

ফরিদপুর: অবশেষে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন ফরিদপুর রেলস্টেশনে রাত কাটানো গোপাল চন্দ্র ঘোষ (৬০) নামের সেই হতভাগা বৃদ্ধ।  

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের টেপাখোলা এলাকায় অবস্থিত ‘শান্তি নিবাস’ বৃদ্ধাশ্রমে তার ঠাঁই হয়।

 

আরও পড়ুন > ‘পথেঘাটে ঘুমানোর দিন আর গেল না বাহে’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসানের নির্দেশে ও জেলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালীর উদ্যোগে এদিন সন্ধ্যায় ফরিদপুর রেলস্টেশন থেকে ইউএনও’র গাড়িতে করে তাকে শান্তি নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।  

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, বৃদ্ধাশ্রম ‘শান্তি নিবাস’র ডেপুটি সুপার তাহসিনা জামান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের ফরিদপুর প্রতিনিধি হারুন-অর-রশীদ, স্কুল শিক্ষক ও বিডি২৪লাইভ.ডটকমের প্রতিনিধি এহসানুল হক মিয়া প্রমুখ।

মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে হতভাগা গোপাল চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাকে যারা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিল, বিধাতা যেন তাগো ভালো করেন। আজ থেকে আর রেলস্টেশনে ঘুমাতে হবে না। ’ 

এ সময় তিনি জেলা প্রশাসক সাহেব ও সদর ইউএনও সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  

এ ব্যাপারে বৃদ্ধাশ্রম ‘শান্তি নিবাস’র ডেপুটি সুপার তাহসিনা জামান বাংলানিউজকে বলেন, খুব ভালো লাগছে এ রকম একজন হতভাগা বৃদ্ধকে এ নিবাসে স্থান করে দিতে পেরে। রাষ্ট্রের একজন প্রতিনিধি হিসেবে তার পাশে থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমরা তার প্রতি সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।  

এ ব্যাপারে জেলা সদর ইউএনও লিটন ঢালী বাংলানিউজকে বলেন, জনপ্রশাসন সব সময় মানুষের জন্য কাজ করে। সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে ওই অসহায় বৃদ্ধের জন্য কিছু একটা করার জন্য উদগ্রীব ছিলাম। অবশেষে ডিসি স্যারের পরামর্শে ও সহযোগিতায় এরকম মানবিক কাজের অংশীদার হতে পেরে ভালো লাগছে।  
 

তিনি বলেন, হতভাগা ও ছিন্নমূল মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে ফরিদপুরে ‘শান্তি নিবাস’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০০১ সালে তার উদ্বোধন করা হয়। তার মানবিকতার সুফল হতভাগা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা পাচ্ছেন।  

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, ভালো কাজের অনুভূতি সবসময় ভালো লাগার-ই কথা। তবে, অসহায় এরকম মানুষের পাশে দাঁড়ানো দায়িত্ববোধের মধ্যে পড়ে। আমরা সবসময় অসহায়দের পাশে থাকি, তাদের পাশে দাঁড়াই। কারণ, মানুষ মানুষের জন্য। তাইতো, মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগে।

এ সময় সদর ইউএনও লিটন ঢালীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের ইউএনও বেশ উদ্যোগ নিয়ে নানামুখী ভালো কাজ করে থাকেন। তিনি মানবিক একজন মানুষ।  

এর আগে, গত ১৪ জানুয়ারি ‘পথঘাটে ঘুমানোর দিন আর গেল না বাহে’ -এ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে বাংলানিউজ। সংবাদ প্রকাশের পরপরই বিষয়টি নজরে আসে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসনের। তখনই তারা বৃদ্ধ গোপাল চন্দ্র ঘোষের জন্য কিছু করার কথা জানান এ প্রতিবেদককে। তারাই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যায় ‘শান্তি নিবাস’ বৃদ্ধাশ্রমে এ মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো ওই বৃদ্ধের।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।