ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেহেরপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৩
মেহেরপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ 

মেহেরপুর: মেহেরপুর সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া নওদাপাড়া এলাকায় সিঁড়ি ঘরের আড়া থেকে নাজমীন খাতুন নাজমা (৪৬) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ।

নাজমা খাতুন সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়ার গ্রামের হাফিজুল ইসলামের (তেলা) স্ত্রী ও একই উপজেলার আলমপুর গ্রামের নাজিম উদ্দীনের মেয়ে।


এ ঘটনার পর থেকেই স্বামী হাফিজুল ইসলামসহ তার বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।

শনিবার (৫ আগস্ট) ভোরে নাজমার ঝুলন্ত মরদেহটি তার বাড়ির সিঁড়ি ঘরের আড়া থেকে উদ্ধার করা হয়।

খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নাজমা খাতুনের বড় ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় হত্যার অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাফিজুল ইসলামের প্রতিবেশী সার ব্যবসায়ী মিয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রায় দিনই হাফিজুল ইসলাম তার স্ত্রী নাজমাকে মারধর করতো। এ ঘটনার আগের দিনে তার স্ত্রীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করা হয়েছে বলে শুনতে পেরেছি। এর আগে কয়েকবার সে বাবার বাড়িতেও চলে গিয়েছিল। গ্রামের লোকজন স্ত্রীকে বুঝিয়ে বাবার বাড়ি থেকে আবার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে এসেছে।  

প্রতিবেশী রেশেন্নারা খাতুন জানান, এই বাড়িতে গতকাল কোনো মারামারি হয়নি। পরশুদিন মেয়েটাকে মারধর করেছিলেন তার স্বামী হাফিজুল ইসলাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী নারী জানান, এতো মারে বউটাকে। যেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তিনি বলেন আমাদেরও স্বামী সংসার আছে। এভাবে মারধর চোখে দেখা যায় না।

নিহত নাজমার ফুফু আসমা খাতুন বলেন, ২০ বছর আগে নাজমার বিয়ে  হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী কারণে অকারণে নাজমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে। এর আগে একবার আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। মেরে একবার হাত ভেঙে দিয়েছে। তারপরেও নাজমা কিছু বলতে দেয়নি। বলেছে, আমার দুটো ছেলে মেয়ে আছে ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসার করবো। আমাদের মেয়েটাকে পাষণ্ড হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমরা এই হত্যা মামলার সঠিক বিচার চাই।  

নিহত নাজমার খালাতো বোন মমতাজ খাতুন বলেন, আমরা গিয়ে লাশ ঝুলতে দেখিনি। আমরা গিয়ে দেখি লাশ মাটিতে শোয়ানো রয়েছে। তার শোয়ার ঘরের মধ্যে দেয়ালে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ, একটি রক্ত মাখা লুঙ্গি পড়ে আছে। যেখানে গলায় ফাঁস দেওয়ার কথা বলছে। সেখানে সামান্য উঁচু স্থান। ওখান থেকে কোনোভাবে ফাঁস দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ পা বেধে যাবে। আমাদের ধারণা তাকে হত্যা করে লাশ ঝোলানো হয়েছে।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট করে মর্গে পাঠিয়েছি ময়নাতদন্তের জন্য। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলেই বিষয়টি পরিষ্কার হব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।