ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রেনেড হামলা: স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা তাদের সঙ্গী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
গ্রেনেড হামলা: স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা তাদের সঙ্গী শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় গ্রেনেড হামলা

ঢাকা: দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে শরীরে স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াল সেই গ্রেনেড হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া আহতদের অনেকে। শরীরে তীব্র যন্ত্রণার সঙ্গে সেই ভয়ানক স্মৃতি এখনো দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে তাদের।

গ্রেনেড হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া আহতদের একজন ভোলার বোরহান উদ্দিনের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। যে ট্রাকের ওপর মঞ্চ বানিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশটি হয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই ট্রাকের চালক। গ্রেনেড হামলার সময় তিনি ট্রাকের ভেতরে চালকের আসনে বসেছিলেন। গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সেই সময় তার শরীরে ১১টি স্প্লিন্টার ঢুকেছিল। পরবর্তীতে অপারেশন করে ১০টি স্প্লিন্টার বের করা সম্ভব হলেও কোমরে থাকা একটি স্প্লিন্টার এখনো তার শরীরে।

বাংলানিউজকে রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেনেডের স্প্লিন্টার তার হাত, মুখ, কোমরে ঢোকে। তার তিনটা আঙুল ছিঁড়ে যায়।

তিনি বলেন, ১০টা স্প্লিন্টার অপারেশন করে বের করা সম্ভব হলেও কোমরে একটি স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। এটি নিয়েই হয়ত কবরে যেতে হবে। এখনো অমাবস্যা-পূর্ণিমায় কোমরে ভয়াবহ ব্যথা হয়।

সেই ভয়াল দিনের স্মৃতিচারণ করে রফিকুল বলেন, বাঁচানোর মালিক স্বয়ং আল্লাহ। যে অবস্থায় বোম পড়ছে, যে অবস্থায় শেখ হাসিনা ছিলেন, তাকে হয়ত স্বয়ং আল্লাহ পাকে বাঁচাইছে। ওই সময়ের পরিস্থিতিটা ছিল কেয়ামতের মতো!

১৯ বছর ধরে গায়ে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, শরীরে থাকা স্প্লিন্টারে এখনো যন্ত্রণা হয়। যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছি!

নাজিম জানান, শীত এলে যেন হাত-পা অবশ হয়ে যায়। গরম এলে চুলকানি, অনেক সময় রক্ত বের হয়।

নাজিম উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ভারতে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা গুরুতর আহতদের মধ্যে একজন রাশিদা আক্তার রুমা। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার সঙ্গে নিয়ে বছরের পর বছর ক্র্যাচে ভর দিয়ে চলছেন তিনি।

রফিকুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন, রাশেদা আক্তারের মতো আরও অনেকের আজীবনের সঙ্গী গ্রেনেডের স্প্লিন্টার। ভয়াল স্মৃতির সঙ্গে শরীরে থাকা স্প্লিন্টারের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন তারা। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত সবার শাস্তি কার্যকরের দাবি আহতদের।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। গ্রেনেডের আঘাতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন। আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী।

তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা, আওয়ামী লীগ সভাপতি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। তবে আহত হন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৪২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এমইউএম/এমজেএফ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।