ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলায় জনতার ভিড়

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলায় জনতার ভিড়

মাদারীপুর: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শ্যামা পূজা উপলক্ষে মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে শুরু হয়েছে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা।  

ছয় দিনব্যাপী এ মেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভুরঘাটা এলাকায় সড়কের দুইপাশে শত শত দোকান পসরা সাজিয়ে বসেছে।

এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র; যা কিনতে প্রতিমুহূর্তেই ভিড় করছেন ক্রেতারা।

রোববার (১২ নভেম্বর) শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) পর্যন্ত।

সুলভমূল্যে জিনিসপত্র পাওয়ায় হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। সবার সহযোগিতায় প্রতিবছর বৃহৎ আকারে মেলা হয়ে আসছে বলে জানায় আয়োজকরা। আর মেলাকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।

মেলা মাঠ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, ঢাক-ঢোল, বাঁশি আর কাসার ঘণ্টার শব্দে মুখর চারপাশ। শ্যামা দেবীর আরাধনায় মগ্ন ভক্তরা। ছুটে আসছেন পুজারীরাও।

জানা গেছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শ্যামা পূজা উপলক্ষে কালকিনির ভুরঘাটায় শুরু হয়েছে ছয় দিনব্যাপী কুন্ডুবাড়ি মেলা। মেলাকে ঘিরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুই পাশসহ প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে সারি সারি দোকান। এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। যা কিনতে প্রতিমুহূর্তেই ভিড় করছেন ক্রেতারা। মেলায় হাজারেরও বেশি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। অধিকাংশ দোকানিরা রাজধানী ঢাকা, নরসিংদী, বগুড়া, রাজশাহী, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায় থেকে এসেছে। মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কাঠের তৈরি খাট, সোফা, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রও। স্বল্প দামে এসব জিনিস কিনতে পেরে খুশি দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা। আর ভালো বিক্রি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা।

আয়োজক কমিটি জানায়, বাংলা ১৭৮৩ সালে মহেষ চন্দ্র কুন্ডু এই মেলা শুরু করেন। সেই থেকে একটানা হয়ে আসছে মেলা। ঐতিহ্যবাহী মেলায় প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার মালামাল বিক্রি হয়। ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে আসছে কুন্ডুবাড়ি মেলা। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে কেনা-বেচা করতে পারছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

মেলায় আশা দর্শনার্থীরা জানান, সাংসারিক জিনিসপত্র থেকে শুরু সব ধরনের আসবাবপত্র এই মেলায় পাওয়া যায়। দামটাও নাগালের মধ্যে থাকায় অসংখ্য মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন এখানে। মেলাকে কেন্দ্র করে আত্মীয়-স্বজনেরাও বেড়াতে আসছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে বাড়ি ফিরেন।

কুন্ডুবাড়ি মেলা কমিটির সহসভাপতি স্বপন কুমার কুন্ডু জানান, পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সবার সহযোগিতায় প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসছে। দিনে দিনে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্রেতা দোকান নিয়ে আসেন এখানে।

ফরিদপুরের কানাইপুর থেকে আসা দোকানি কৃষ্ণ কুমার সূত্রধর জানান, এই মেলায় প্রায় ২০ বছরে আমরা দোকানদারি করছি। ক্রেতাদের চাহিদা মত সব ধরনের কাঠের জিনিসপত্র নিয়ে এসেছি। ভাল কেনা-বেচা হয়, তাই প্রতিবছরই মেলায় আসি।

অন্যান্য বিক্রেতারা জানান, কুন্ডু বাড়ির মেলাকে ঘিরে বিক্রেতাদের আলাদা প্রস্তুতি থাকে। এট একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় নিয়ে আসা সব মালামাল বিক্রি হয়ে যায়। তাই কোনো চিন্তা থাকে না।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান জানান, মেলাকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থী ও ভক্তদের নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের নির্দেশনা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।