ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হরতাল-অবরোধে ৩১০টি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৩৭৬টি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
হরতাল-অবরোধে ৩১০টি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৩৭৬টি

ঢাকা: গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পরবর্তী দফায় দফায় বিএনপির হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলছে। দলটির নেতাকর্মীরা কর্মসূচি বাস্তবায়নে নাশকতা ও হিংসাত্মক কর্মসূচি চালায়।

দেশব্যাপী হরতাল ও অবরোধে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২৭৫টি যানবাহন ভাঙচুর, ২৪টি স্থাপনা ভাঙচুর ও ১১টি অন্যান্যসহ মোট ৩১০ টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২৯০টি যানবাহন, ১৭টি স্থাপনা ও ৬৯টি অন্যান্যসহ মোট ৩৭৬ টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া ২ নভেম্বর ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগের ২টি অফিসে দুবৃর্ত্তরা অগ্নিসংযোগ করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহছান বিষয়টি জানান।

উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিষয়ে তিনি জানান, গত ১৯ নভেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন বরমী ইউনিয়নের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আ. জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি স্কুলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে বিদ্যালয়টির ৪টি বেঞ্চ  ও ১টি জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।  

অবরোধ চলাকালে ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ৩টি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা মহানগরে ১টি, ময়মনসিংহে ২টি, গাজীপুরে ১টি, নেত্রকোণায় ১টি এবং নওগাঁয় ১টিসহ ৬টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। কিশোরগঞ্জে ১টি, নোয়াখালীতে ২টি, সিলেটে ১টি, পাবনায় ১টি, দিনাজপুরে ১টি ও গাজীপুরে ৩টিসহ রেললাইনে ৯টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে রেললাইন কেটে ফেলার চেষ্টার ৩টি এবং গাইবান্ধায় রেললাইনের ফিস প্লেট খোলার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পাবনায় ট্রেনে পেট্রল ও ডিজেল ভর্তি বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের উপরে অতিরিক্ত ৩ ফুট লম্বা ৩ ইঞ্চি চওড়া পাত সংযোজন করে নাশকতার চেষ্টা করা হয়।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে রমনায় ২ জন, বংশালে ২ জন, মুগদায় ৪ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ২ জন, মোহাম্মদপুরে ১ জন, পল্লবীতে ৮ জন , কাফরুলে ১ জন, গুলশানে ৫ জন ক্যান্টনমেন্টে ১ জন, খিলক্ষেতে ২ জন ও উত্তরা পূর্ব থানায় ১ জন।

এছাড়া ২৮ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগ করাকালে ৬টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ জন ও পিকেটিং করাকালে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশকে বিতর্কিত করতে নাশকতাকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘প্রেস’ লেখা জ্যাকেট পরে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। এ অবস্থায় ভাঙচুর ও নাশকতামূলক হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ পুলিশ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এ কর্মকর্তা জানান, অবরোধ-হরতালে পরিবহণ বা স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
পিএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।