ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্যুটকেসে মরদেহ: যে কারণে হত্যা করা হয় মিলনকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
স্যুটকেসে মরদেহ: যে কারণে হত্যা করা হয় মিলনকে

ফরিদপুর: গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে ফরিদপুর জেলা শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেলে যাওয়া একটি তালাবদ্ধ স্যুটকেস থেকে পাওয়া মরদেহের পরিচয় ও হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।  

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্যুটকেসে মেলা মৃত ওই ব্যক্তির নাম মিলন প্রামাণিক (৩৯)। তিনি পাবনা সদরের নতুন গোহাইবাড়ী মহল্লার কাশেম প্রামাণিকের ছেলে। তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকার একটি ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। মিলনের সঙ্গে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এক নারী রোজিনা আক্তার ওরফে কাজলের (৩২) সম্পর্ক ছিল। এ সুবাদে রোজিনা বিভিন্ন সময়ে মিলনকে তিন-চার লাখ টাকা ধার দেন। এ টাকা ফেরত না দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে রোজিনার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয় মিলনকে। পরে মিলনের মাথা ও পা পেঁচিয়ে একটি স্যুটকেসে ভরা হয়। পরে একটি রিকশায় করে স্যুটকেসটি গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে এসে সেখানে ৬০০ টাকায় একটি মাহেন্দ্র (থ্রি-হুইলার) ভাড়া করে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসেন রোজিনা। পরে ঢাকাগামী পরিবহনে টিকিট কেটে স্যুটকেসটি বাসের মালপত্রের লকারে তোলা হয়। বাস ছাড়ার সময় ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় বাসটির চালকের সহযোগী (হেলপার) স্যুটকেসটি বাসস্ট্যান্ডের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে রেখে যান।

পুলিশ সুপার জানান, রোজিনা যে রিকশা ও মাহেন্দ্রটি ব্যবহার করেছেন তাদের চালকদের আটক করা হয়েছে। তাদের এ হত্যা মামালায় স্বাক্ষী করা হবে। আর রোজিনাকে গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৩টার দিকে ঢাকার জুরাইন এলাকা থেকে কদমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামীম হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গত রবিবার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুর গফফার, পুলিশ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) তুহিন লস্কর, পুলিশ পরিদর্শক আবু তাহের, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক সুজন বিশ্বাস ও এই মামলার বাদী এসআই মোহাম্মদ শামীম হাসান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার এসআই সুজন বিশ্বাস জানান, রোজিনাকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে পরবর্তী সময়ে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

** ফরিদপুর বাস টার্মিনালে ফেলে যাওয়া লাগেজে পাওয়া গেল মরদেহ  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।