ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তে উত্তেজনা, জনমনে আতঙ্ক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তে উত্তেজনা, জনমনে আতঙ্ক

কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের পর এবার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে। রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে কোণঠাসা হয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯৫ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

সোমবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যদের সংখ্যা জানানো হয়েছিল ৬৮ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগের ৬৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের বেশি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সোমবার ভোর পর্যন্ত নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৭ জনের কতজন আহত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার দিনভর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। এতে সংঘর্ষের জেরে রোববার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তারা আশ্রয় চাইলে বিজিবি তাদের হেফাজতে নেয়। বিজিবি তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। বিজিপির আহত সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ধামনখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

পালংখালীর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পালংখালী সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। তবে সকালের পর  নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে মানুষের মাঝে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩টি গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক। বিজিপির চিকিৎসাধীন ওই দুই সদস্য হলেন—রি লি থাইন (২২) এবং জা নি মং (৩০)।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ছয় সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

আহতরা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে দুজনের বয়স ২৪, দুজন ২৩, একজন ২০ এবং বাকি একজন ২২ বছর বয়সী বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪
এসবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।