ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থ পাচার এই সরকারের বড় সমস্যা: ব্যারিস্টার সুমন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
অর্থ পাচার এই সরকারের বড় সমস্যা: ব্যারিস্টার সুমন ফাইল ছবি

ঢাকা: অর্থ পাচার এই সরকারের বড় সমস্যা যা কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন)। এই সরকারকে ব্যর্থ করতে আরও একটা বাজেট আছে, সেই বাজেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

সৈয়দ সায়েদুল হক বলেন, অর্থ পাচার এই সরকারের বড় সমস্যা। কিছুতেই এটি ঠেকানো যাচ্ছে না। দুর্নীতি করলে তো সেই টাকা অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনা যায়। পাচার হয়ে গেলে যে দেশে যায় সেই দেশের অর্থনীতির বাজেট হয়ে যায়। আমরা তো বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরই আনতে পারিনি, আর পাচার করা টাকা ফেরত আনবো কীভাবে? অর্থ পাচারের কারণে আমাদের বাজেট সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এই সরকারের মধ্যে রাসেল ভাইপার সাপ ঢুকে গেছে। প্রকৃতিতে যখন সাপ আসে, তখন বেজি সেই সাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই সরকারে সাপ ঢুকেছে, কিন্তু সেই সাপকে ধরার মতো বেজি নেই। তাই সাপ বেড়েই চলেছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা দুর্বল হয়ে গেছে! একজন ‘ভদ্রলোক’কে দুদক ধরতে পারেনি, এনবিআর ধরতে পারেনি, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট ধরতে পারেনি, সেখানে এনবিআর’র মতিউর রহমানকে ধরলো একটা ছাগল। ছাগলকাণ্ড না ঘটলে আর ফেসবুক ভাইরাল না হলে এই লোকের বিষয় তো সামনেই আসতো না। বেনজীর কাণ্ড! মাননীয় সাবেক আইজিপি! উনি এত বড় হয়ে গেলেন, মন্ত্রণালয় জানলো না, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানলেন না! আর কিছুদিন সময় পেলে পুরো গোপালগঞ্জ কিনে ফেলতেন এই বেনজীর সাহেব। এটার দায় মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। এখন কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যদি এমন হয় যে, কিছু জমানো টাকা রয়ে গেছে যেটাকে সাদা করবেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু, এই সুযোগ ব্যবহার করে বেনজীর আর মতিউরের টাকাও যদি সাদা হয়ে যায়, আর এদের আদর্শের উত্তরাধিকারদের টাকাও যদি সাদা হয়ে যায়, এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে কয়েকটা চাপ নিতে হবে। এই বাজেটে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন ব্যয় মেটানো হবে। আড়াই লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। এমপি হওয়ার পর আমি এক কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছি। ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছি। এতেই রাতে ঘুম হয় না। আড়াই লাখ কোটি টাকা ঋণের চাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ঘুমাবেন, তা উনিই জানেন। তবে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এমন এক পাখি যিনি বসেন ডালের উপর, কিন্তু ভরসা রাখেন নিজের পাখার উপর। এ কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক সরে গেলেও নিজের পাখায় ভর করে তিনি ঠিকই পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, শ্রীলঙ্কা যখন দেউলিয়া হয়, তখন সবাই বলেছিলেন বাংলাদেশের দেউলিয়া হওয়া সময়ের ব্যাপার। পাকিস্তান যখন দেউলিয়ার পথে, তখনও একই কথা বলেছিল সবাই। ভারত অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়লেও একই কথা সামনে এসেছে। কিন্তু, আমাদের অর্থনৈতিকভাবে দাবিয়ে রাখা যায়নি। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার সম্পদ আমাদের চেয়ে কম ছিল না, শুধু তাদের হাতে ছিল না একজন শেখ হাসিনা। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া। সরকার যেমন সংসদে বাজেট দিচ্ছে, এই সরকারকে ব্যর্থ করতে আরও একটা বাজেট আছে। সেই বাজেটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। তার সঙ্গে আছে ডলার।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
এসকে/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।