ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি ডাঙার লোকজনের, বঞ্চিত বন্যার্তরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৪
ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি ডাঙার লোকজনের, বঞ্চিত বন্যার্তরা

কুমিল্লা: কুমিল্লায় বন্যাদুর্গত এলাকায় সমস্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সরকারি সহায়তার অর্থ শেষ হয়ে গেছে।

বাইরে থেকে প্রচুর ত্রাণ এলেও শৃঙ্খলার অভাবে সুষম বণ্টন হচ্ছে না। বেশ কিছু স্থানে বন্যার্ত দাবি করে ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে।  

এমনকি ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে বন্যাকবলিত নয়, ডাঙার এমন লোকজনও। দুর্গত এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ ও সেনা সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে গোমতীর বাঁধ দিয়ে অনবরত পানি প্রবেশ করায় এবং নতুন করে সালদা ও ঘুঙুর নদীর ভাঙনের কারণে কার্যত পানির ওপর ভাসছে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। পানি ঢুকছে দেবিদ্বার উপজেলাতেও। বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া প্লাবিত হওয়ার পর দেবিদ্বারে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

গোমতী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ত্রাণের গাড়ি শহরতলীর শাসনগাছা থেকে পালপাড়া ব্রিজ হয়ে কালখাড়পাড় এলাকা দিয়ে বুড়িচংয়ে প্রবেশ করে। কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন বস্তি থেকে আসা লোকজন এ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এছাড়া বন্যাদুর্গত নয়, এমন এলাকার লোকজনও ভিড় করছে এসব এলাকায়। যার কারণে ত্রাণবাহী গাড়িগুলো ঠিকভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। কিছু গাড়ি ভিড় ঠেলে একটু সামনে অগ্রসর হলেও নৌকার অভাবে গন্তব্যে খাবার পৌঁছে দিতে পারছে না। এ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে ত্রাণ নিয়ে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বন্যাদুর্গত নয় বা বন্যায় সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের হাতেই ত্রাণ তুলে দিচ্ছে। একাধিক স্থানে ত্রাণবাহী গাড়িতে হামলাও করছে বস্তির লোকজন। কিন্তু রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকেই কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না।

বুড়িচং সদরের বাসিন্দা জহিরুল হক বাবু বলেন, সব জায়গায় শৃঙ্খলার অভাব। যাদের ত্রাণ দরকার তারা পাচ্ছে না। যারা পাচ্ছে, তারা একাধিকবার পাচ্ছে। ত্রাণের গাড়িগুলো সদর উপজেলা হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেই দুর্বৃত্তের কবলে পড়ছে। সড়কে প্রশাসনের সরব উপস্থিতি ও সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকলে যে পরিমাণ ত্রাণ আসছে, তা দিয়ে দুর্গত এলাকায় কয়েকদিন চলে যেত।

বুড়িচংয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, আমরা পানির ওপর ভাসছি। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের দিয়ে দুর্গম এলাকায় খাবার দিচ্ছি। তারা বোট পরিচালনা করছে। এটা তাদের কাজ না। একাধিক স্থানে ত্রাণের গাড়ির ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। তবে যে পরিমাণ সেনা সাপোর্ট দরকার, তা পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্রাহ্মণপাড়ার দুলালপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল হক বলেন, মাধবপুর ইউনিয়নের সামান্য কিছু অংশ ব্যতীত এ উপজেলার শতভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছে না এ উপজেলার মানুষ।

ব্রাহ্মণপাড়ার নির্বাহী কর্মকর্তা স.ম আজহারুল ইসলাম বলেন, সরকারি বরাদ্দের টাকা শেষ। বুড়িচং হয়ে এখানে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব না। যারা ত্রাণ কাজে সহায়তা করতে চান, তারা মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ হয়ে ব্রাহ্মণপাড়ায় ঢুকতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।