ঢাকা, বুধবার, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ১২ মার্চ ২০২৫, ১১ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির শর্ত ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা: ডিএমপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৫
রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির শর্ত ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা: ডিএমপি ফাইল ফটো

ঢাকা: কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি, খোঁড়াখুঁড়ির শর্ত ভঙ্গ করে মহানগরীতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)।  

বুধবার (১২ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিএমপি বলছে, সম্মতি ছাড়া রাজধানীর কোনো রাস্তা কাটাকাটি ও খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। ঢাকা মহানগরীর রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ দিনের পরিবর্তে রাতে সঠিকভাবে দ্রুত সম্পাদনে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, কিছু কিছু সংস্থা/ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনের বেলা বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা পুনরায় মেরামত করতে অনেক সময় ৭/৮ মাস লেগে যায়। প্রায় সব ক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। সব খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জায়গা কাটা হয়। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য দিকনির্দেশনা সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানোর বিধান থাকলেও তা করা হয় না। এক লেনে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি/আবর্জনা অন্য লেনে ফেলে রাখার ফলে দুই লেনেই যান চলাচল ব্যাহত হয়।

এতে আরও বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রে একই সঙ্গে রাস্তার উভয় পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা হয়, ফলে রাস্তা উভয় দিক থেকে সরু হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলেও কাটা অংশ সঠিকভাবে ভরাট বা লোহার শিট না দেওয়ার ফলে দিনের বেলায় সে রাস্তায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন-ক্যাবল/পাইপ ইত্যাদি) সংগ্রহ করার পূর্বেই রাস্তা খনন করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বা ডাইভারশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় না।

এসব কারণে ঢাকা মহানগরীর যানজট বৃদ্ধি পেয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি হয় এবং যানবাহন রাস্তায় অলসভাবে বসে থাকার ফলে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি/কাটাকাটির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা এবং ঠিকাদারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে ডিএমপির নির্দেশনা 

• ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ব্যতীত রাস্তা কাটাকাটি ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা।

• সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এ ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

রাস্তা কাটার আগে যেসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে
• কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় (অর্থাৎ কোন তারিখে কাজ শুরু এবং শেষ হবে তা) পূর্বেই ঘোষণা করতে হবে এবং ওই সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে।

• রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে-পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্রাফিক নির্দেশনা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে।

• নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে।

• পথচারী এবং যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

• কাটা রাস্তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার পূর্বেই সেখানে আনতে হবে।

• রাস্তার একটা লেন রাতের বেলা কাটা যেতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই সূর্যোদয়ের পূর্বেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে।

• কোনো অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না।

• ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে।

• কোনো রাস্তা রাতে সর্বোচ্চ ৭ দিন খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারদের সহযোগিতা কামনা করছে। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি, খোঁড়াখুঁড়ির এসব শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা মহানগরী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৫
এমএমআই/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।