ঢাকা, বুধবার, ১১ চৈত্র ১৪৩১, ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৫ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

বদলির পরও পদ আঁকড়ে থাকা বিএমডিএর ইডি চেয়ার ছাড়লেন তোপের মুখে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
বদলির পরও পদ আঁকড়ে থাকা বিএমডিএর ইডি চেয়ার ছাড়লেন তোপের মুখে

রাজশাহী: বদলির এক মাস পরও কোনোভাবেই দপ্তরের চেয়ার ছাড়ছিলেন না বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) ও অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম। তাই সংস্থাটির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে জোর করেই দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেছেন।

রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা-কর্মকর্তাদের তোপের মুখে শেষ পর্যন্ত চেয়ার ছাড়েন তিনি।

সরকারের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামকে গত বছরের জুলাইয়ে বিএমডিএর ইডি হিসেবে পদায়ন করা হয়। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে রাজশাহীতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়। তবে সেখানে না গিয়ে একমাস ধরে তিনি ছিলেন বিএমডিএতেই।

বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সুপারিশে তিনি বিএমডিএর ইডি হয়েছিলেন। তিনি এখনও আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বদলির আদেশের পরও তিনি নাজিরুল ইসলাম নামের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বিএমডিএর রাজশাহী জোনের প্রধান করে পদায়ন করেন। নাজিরুল ইসলাম ২৫১ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকার দুটি প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)। আওয়ামীপন্থী এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দুই প্রকল্পের পিডি হন। ইডির বদলির আদেশের পরও তিনি নতুন কর্মস্থলে না গিয়ে নাজিরুল ইসলামকে জোনের প্রধান করে পদায়ন করা হলে এ নিয়ে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এর সূত্র ধরেই হট্টগোল হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে ইডি তার কার্যালয়ে ছিলেন। তখন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সেচ শাখার প্রধান জাহাঙ্গীর আলম খানসহ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তার দপ্তরে যান। তারা রোববারের মধ্যেই দপ্তর ছেড়ে তাকে রেশম বোর্ডে গিয়ে যোগদান করতে বলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে শফিকুল ইসলামের মধ্যে উত্তপ্ত তর্কবিতর্ক হয়।

এ সময় দুয়েকজন তাকে চেয়ার থেকে ওঠাতেও এগিয়ে যান। তখন শফিকুল ইসলাম দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হন। পরে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সেচ শাখার প্রধান জাহাঙ্গীর আলম খানকে দায়িত্ব অর্পণ করেন। এ সংক্রান্ত এক নথিতে শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম খান সই করেন। পরে শফিকুল ইসলাম বেরিয়ে গেলে তার চেয়ারে বসেন জাহাঙ্গীর আলম খান।

রোববার দুপুরে ইডির দপ্তরে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলম খানকে চেয়ারে দেখতে পান সংবাদকর্মীরা। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দায়িত্ব প্রদান ও গ্রহণ করেছে।

এ ঘটনার সময় দপ্তরে ছিলেন না বিএমডিএর চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান। তার ব্যক্তিগত সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, শফিকুল ইসলাম বিএমডিএর কর্মকর্তা নন। তাকে অন্য দপ্তর থেকে সরকার এখানে পদায়ন কর হয়েছিল। এরপর তিনি বদলির আদেশের পেলেও গেল একমাস ধরে বিএমডিএর দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। বদলির আদেশের পরও জোন প্রধান করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে সইও করেছেন। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে দপ্তর ছাড়তে অনুরোধ জানান। পরে তিনি তাদের কথা রেখে দায়িত্ব ছাড়েন।

পরে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময় : ০০০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৫
এসএস/এমজে

 
 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।