ঢাকা, সোমবার, ১৬ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সম্পত্তি বিরোধে ১৬ ঘণ্টা বাবার মরদেহ দাফন করতে দিলেন না সন্তানেরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৫
সম্পত্তি বিরোধে ১৬ ঘণ্টা বাবার মরদেহ দাফন করতে দিলেন না সন্তানেরা

যশোর: সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা না হওয়া পর্যন্ত বাবার মরদেহ দাফন করতে দেননি সন্তানেরা। আটকে দেওয়া হয় কবর খননের কাজও।

 

একপর্যায়ে সালিশে মৃতের ছোট স্ত্রী নিজের নামের সম্পত্তির একটি বড় অংশ বড় স্ত্রীর সন্তানদের নামে লিখে দেবেন বলে মুচলেকা দিলে ১৬ ঘণ্টা পর দাফন করা হয় মৃতকে।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৬ মার্চ) যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কোটা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী হাবিবুর রহমান হবি বিশ্বাস (৭০) বুধবার সকাল ৬টায় মারা যান। তার চারজন স্ত্রী এবং নয় সন্তান। মৃত্যুর পর সন্তানদের মধ্যে কয়েকজন বাবার দাফনের জন্য কবর খননের কাজ শুরু করতে চাইলে চার সন্তান আতাউর, সুমন, আনোয়ার ও হাফিজুর বাধা দেন।

তারা দাবি করেন, মৃত্যুর আগে বাবা তাদের কম সম্পত্তি দিয়ে ছোট মাকে বেশি সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন। সেই সম্পত্তি তাদের নামে লিখে না দিলে তারা মরদেহ দাফন করতে দেবেন না।

এলাকাবাসী তাদের কয়েক দফা তাগাদা দেওয়ার পরও তারা কোনো কাজ করতে দেননি। বাড়ির উঠানে বাবার মরদেহ রেখে জমির দাবির প্রতি অনড় থাকেন সন্তানেরা।

একপর্যায়ে স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে বিকেলে সব সন্তানকে নিয়ে সালিশে বসেন। সেখানে ছোট স্ত্রী তার নামে থাকা ৮৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৫০ শতাংশ আট সন্তানের নামে সমানভাবে লিখে দেবেন বলে মুচলেকা দেন। এরপর রাত ১০টার দিকে অর্থাৎ ১৬ ঘণ্টা পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় হাবিবর রহমান হবিকে।
 
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হাবিবুর রহমান হবি ছোট স্ত্রী ও তার ছেলে সোহেল বিশ্বাসের সঙ্গেই থাকতেন। এ স্ত্রী, সন্তান তাকে ভালোভাবে দেখভাল করতেন বলে তিনি অন্যদের কাছে যেতে চাইতেন না।

জীবদ্দশায় হাবিবুর রহমান হবি সস্পত্তি ভাগাভাগির সময় ছোট স্ত্রীর নামে ওই ৮৩ শতাংশ জমি লিখে দিয়েছিলেন। এটি নিয়েও কয়েক দফা সালিশ হয়েছে তখন। কিন্তু, তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।

সন্তান সোহেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মা নিজের সম্পত্তি লিখে না দেওয়া পর্যন্ত সৎ ভাইয়েরা বাবার মরদেহ কবরস্থ করতে দেননি। এটা হওয়া ঠিক হয়নি।

চলিশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বিষয়টিকে দুঃখজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ৮৩ শতক জমি নিয়ে সন্তানদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে এলাকাবাসী সালিশ করে একটা সমাধান করে দিয়েছেন। তবে, মরদেহ উঠানে রেখে সম্পত্তি ভাগাভাগি করাটা ভালো হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।