ঢাকা, সোমবার, ১৭ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধে ফুল না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধে ফুল না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জাতীয় দিবসের কর্মসূচি চলাকালে স্মৃতিসৌধ এবং শহীদ মিনারে ফুল না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এহতেশামুল হক।  

গত বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক সেখানে ফুল  দেননি।

 

এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেও তিনি শহীদ মিনারে ফুল দেননি। যদিও তার পাশে থাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোছাইন তখন ফুল দেন। টানা দুটি জাতীয় দিবসে পুলিশের সর্বোচ্চ স্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে ফুল না দেওয়ায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কেন তিনি এমনটা করলেন?

জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের আহ্বায়ক ও সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি (সনাক) অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে তাকে রাষ্ট্রের আইন মানতে হবে। তিনি যদি ধর্মীয় বোধ থেকে প্রতিবন্ধকতা মনে করেন, তাহলে তার চাকরিতে থাকা উচিত না। রাষ্ট্রের আচার অনুষ্ঠান আইন তাকে মানতে হবে। শুধু তাই না, আমি মনে করি, রাষ্ট্রের আইনের প্রতি তার একটা শ্রদ্ধা বোধ থাকা উচিত। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে, তিনি যেমন রাষ্ট্রের কাছে অনুগত থাকবেন, তেমনি আইনের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হবেন। আইন তাকে মানতেই হবে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চেইন অব কমান্ড অনুযায়ী আমরা পুলিশ সুপারের কমান্ড মানতে বাধ্য। তাই তিনি আমাদের যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা সেভাবে নির্দেশনা পালন করেছি। আমরা রাষ্ট্রীয় সালামে অংশ নিয়েছি। স্যার কেন অংশ নেননি এটা আমরা কেমন করে বলি।

নাম না দেওয়ার শর্তে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রত্যেকেই তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে সরকারি কর্মকর্তাদের জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা যথাযথভাবে পালন করা উচিত এবং রাষ্ট্রীয় আচার অনুযায়ী তা তিনি মানতে বাধ্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয় জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম বলেন, আমি তাকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর সময় বলেছিলাম। কিন্তু তিনি উপস্থিত থাকলেও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাননি। আজও একই বিষয় হয়েছে।

তিনি উপস্থিত থাকলেও তার দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় সালাম গার্ড অব অনারে অংশ নেন। তিনি পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধাচারে অংশ নেননি। তবে তিনি জেলা পুলিশ বিভাগের প্রধান হিসেবে একটি শৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান হিসেবে এমনটি তিনি করতে পারেন না। রাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি বাধ্য। তবে তিনি কেন এমন করেন, তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন, যোগ করেন জেলা প্রশাসক।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক সংবাদকর্মীদের জানান, অফিসে আসেন। মোবাইল ফোনে বলা যাবে না। রোজার মাসের পরে আসেন। চা খেতে খেতে বলা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।