রাজশাহী: রাজশাহীতে রাজনীতিমুক্ত ঈদগাহ এবং ওলামালীগ নেতাকে ঈদগাহের ইমাম থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে। এ দাবিতে শুক্রবার (২৮ মার্চ) মানববন্ধন করেছেন মুসল্লিরা।
এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পারিবারিক মসজিদের ইমাম এবং ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে হামলার সময় অস্ত্রের জোগানদাতা মাওলানা বারকুল্লাহ বিন দুরুল হোদাকে অপসারণের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৫ বছরে মহনগরীর অন্যতম বৃহৎ হাজী লাল মোহাম্মদ ঈদগাহের ইমাম মাওলানা বারকুল্লাহ বিন দুরুল হোদা ঈদগাহকে রাজনৈতিক ঈদগাহে পরিণত করেছিলেন। উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সাবেক মেয়র লিটনের আশীর্বাদে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি পেয়েছেন। তার দাপটে আলেম-ওলামারা ভয়ে ও আতঙ্কে থাকতেন। ওলামালীগ নেতা বারকুল্লাহ ঈদের নামাজের পর মোনাজাতে কেবল আওয়ামী লীগ নেতা লিটন ও তার পরিবারের গুণকীর্তন করে দোয়া করতেন। এতে ঈদগাহের মুসল্লিরা বিরক্ত হলেও লিটনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না।
তারা আরও বলেন, গত ৪ ও ৫ আগস্ট রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ। ওই সময় মহাগরীর রানীনগর মাদরাসায় মাওলানা বারকুল্লাহর নেতৃত্বে অস্ত্রের মজুদ রাখা হয়। ওইসব অস্ত্র নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। মাদরাসা থেকেই হামলাকারীদের খাদ্যের জোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয় মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে।
বক্তারা বলেন, আগস্টের গণহত্যায় জড়িত মাওলানা বারকুল্লার ইমামতিতে মুসল্লিরা আর ঈদের নামাজ পড়তে চান না। তাই তাকে অবিলম্বে হাজী লাল মোহাম্মদ ঈদগাহের ইমাম থেকে অপসারণের দাবি তোলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,মহানগরীর হাতেম খাঁ আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শায়খ আমিনুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন, আব্দুর রাকিব ও রাজনীতিবিদ গোলাম রাব্বানী।
আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শায়খ আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদগাহ হলো সব মুসলমানের জন্য। এখানে কোনো ইমামের রাজনৈতিক সংলাপের সুযোগ। ইবাদত বন্দেগির জন্য পবিত্র স্থানে ঈদগাহ। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজশাহী জেলা ওলামালীগের সভাপতি মাওলানা বারকুল্লাহ সাবেক মেয়র লিটনের পৃষ্ঠপোষকতায় ঈদগাহকে রাজনৈতিক প্রচারণার কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছিলেন। এতদিন মুসল্লিরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেননি। এখন তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বারকুল্লাহর অপসারণ চান।
এর আগে জুমার নামাজের পর কয়েকশ' মুসল্লি মহানগরীর হাতেম খাঁ আহলে হাদিস জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে মাওলানা বারকুল্লাহকে অপসারণের দাবিতে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
এসএস/জেএইচ