ঢাকা, শনিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৭ মে ২০২৫, ১৯ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বাপার ১৩ দফা দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৫৮, মে ১৬, ২০২৫
অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বাপার ১৩ দফা দাবি

ঢাকা: নদী, পাহাড় ও কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং কৃষি জমিতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ১৩ দফা দাবিতে নাগরিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।  

শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাপার উদ্যোগ এ নাগরিক সমাবেশ হয়।

বাপা সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে, সমাবেশ পরিচালনা করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক ড. মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, ড. হালিম দাদ খান, জাতীয় কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন, হাজী শেখ আনছার আলী, মো. আবদুল হামিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনিরুজ্জামান, উদিচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, গ্রীন ভয়েস কেন্দ্রীয় শাখার সহ-সমন্বয়ক, মো. আরিফুর রহমান, মোনছেফা আক্তার তৃপ্তি ও গ্রীন ভয়েস ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক তাহমিন প্রমুখ।

এছাড়াও সমাবেশে বাপা কেন্দ্রীয় নেতারা, বিভিন্ন পরিবেশবাদী এবং সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নগরায়ন ও শিল্পায়নের চাপে কৃষিজমি ধ্বংসের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি কৃষিজমি, নদী তীরবর্তী উর্বর ভূমি, এমনকি বনাঞ্চল পর্যন্ত বালু, পাথর উত্তোলন ও ইটভাটা তৈরীর নামে বেহাত হচ্ছে। এই অপতৎপরতা শুধু খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে না বরং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে দীর্ঘমেয়াদে জনজীবনে সংকট তৈরি করছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

মো. আলমগীর কবির বলেন, সরকার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সব নতুন স্থাপনা নির্মাণে ব্লক ইটের ব্যবহার নিশ্চিত করবে কিন্তু এর সামান্যতমও বাস্তবায়ন হয়নি। আমরাও উন্নয়ন চাই কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে কোনো উন্নয়ন চাই না। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সম্পদ এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশ বাপার পক্ষ থেকে ১৩টি সুপারিশ ও দাবি তুলে ধরা হয়:

১. ইআইএ ছাড়া কোনো উত্তোলন প্রকল্প অনুমোদন না করা এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

২. নির্মাণশিল্পে নদীর বালুর পরিবর্তে সমুদ্রের বালু, পুনর্ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী (রিসাইকেলড অ্যাগ্রিগেট) ব্যবহারে উৎসাহিত করা।

৩. জমি ব্যবহারে কৃষিজমি সংরক্ষণ নীতি অনুস্বরণ করে পরিকল্পনা মাফিক কৃষি, শিল্প ও আবাসন এলাকা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা।

৪. স্থানীয় সম্প্রদায়, এনজিও এবং মিডিয়াকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।

৫. জমি হারানো কৃষকদের ক্ষতিপূরণসহ বিকল্প জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা।

৬. বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, যথাযথভাবে প্রয়োগ করা।

৭. নদী খননের জন্য ইকো-ফ্রেন্ডলি টেকনোলজি ব্যবহার করা।

৮. পাথরের পরিবর্তে বিকল্প  হিসেবে পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রী রিসাইক্লড কংক্রিট ব্যবহার করতে হবে।

৯. স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে অবৈধ ড্রেজার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা 

১০. সরকারকে ড্রেজার ব্যবহারের ওপর কঠোর নীতি প্রয়োগ করা।  

১১. কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা।

১২. বিদ্যমান অবৈধ ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করা।

১৩. পরিবেশবান্ধব ‘জিগ-জ্যাগ’ ইটভাটা ও হোলো ব্লকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।


আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।