ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চন্ডিগড়ে গোলাপের ‘স্বর্গরাজ্য’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৮
চন্ডিগড়ে গোলাপের ‘স্বর্গরাজ্য’ চন্ডিগড়ের মানব কল্যাণকামী অনাথালয়ে বাহারি রঙের গোলাপ। ছবি: বাংলানিউজ

চন্ডিগড়, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) থেকে: সবুজে ছায়া ঘেরা ছিমছাম পরিবেশ। পায়ে হাঁটার পথটুকু ছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনে সড়ক ও পুকুরের দু'পাড়ে সারি সারি পাতাবাহারের গাছ। এখানেই রয়েছে সেই বাগান। বাগানে প্রতিদিন ফুটে সাদা, লাল, গোলাপি, হলুদ, কমলা ও বেগুনিসহ সত্তর রঙের গোলাপ ফুল!

শৈল্পিক এমন দৃশ্যপটের দেখা মিলে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের চন্ডিগড়ের মানব কল্যাণকামী অনাথালয়ে। দর্শনার্থীদের জন্য আশ্রমের বাহারি রঙের গোলাপ বাগানটি এখন বাড়তি আকর্ষণ।

আশ্রমের সীমানায় পা ফেলতেই যে কাউকে মোহিত হবেন প্রতিটি গাছে ফোটে থাকা নানারকম গোলাপের ঘ্রাণে। চন্ডিগড়ের মানব কল্যাণকামী অনাথালয়ে বাহারি রঙের গোলাপ।                                          ছবি: বাংলানিউজ শহুরে জীবনে যারা ময়লা আবর্জনার ভাগারের দুর্গন্ধে চুপসে গেছেন তারা সতেজ প্রাণবন্ত একটু সময় কাটাতে এই আশ্রম বা গোলাপের স্বর্গরাজ্যে চলে আসতে পারেন।

আশ্রমের মা নিশা দেবীর সহযোগিতায় বাগানটি তৈরি করেছে অনাথ শিশুরা। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় দূর-দূরান্ত থেকে সত্তর রকমের গোলাপ গাছ সংগ্রহ করে বাগানে করেছেন বলে জানালেন নিশা দেবী।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, 'শিশুদের খুব ইচ্ছে ছিলো এ রকম একটি বাগান তৈরি করার। আমি মা হয়ে তাদের সে ইচ্ছে পূরণ করেছি। ওরা (শিশুরা) ফুল গাছের পরিচর্যা করে নিয়মিত। আর চারিদিক সামলে কাজকর্ম সেরে সময় সুযোগে পেলে আমিও বাগানে আসি। প্রায় দুই কাঠা জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এ বাগান।

একই বাগানে সত্তর রকমের গোলাপ সংগ্রহ সম্পর্কে নিশা বলেন, ‘জেলাসহ দেশ-বিদেশে আমাদের বহু ভক্ত ও অনুসারী রয়েছেন। তাদের সহযোগিতা ও স্থানীয় বিভিন্ন নার্সারি থেকে গোলাপের চারা সংগ্রহ করেছি। প্রত্যেকটি গোলাপের রঙের ভিন্নতায় ভাষাও ভিন্ন...

উদাহরণ টেনে তিনি জানান, কাউকে মনের ভাষা বোঝাতে লাল ও গোলাপি রঙের গোলাপ ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও কৃতজ্ঞতা, স্বীকৃতির প্রতীক গোলাপি গোলাপ। সাদা গোলাপ ব্যবহার করে শান্তি, শুদ্ধতা, পবিত্রতা, ঐশ্বরিক ও সহানুভূতি বোঝানো সম্ভব। মুগ্ধতা ও রোমাঞ্চ ইঙ্গিতে কমলা গোলাপ আর অনুরাগ, আভিজাত্য ও রহস্যময়তা প্রকাশ করতে চাইলে বেগুনি গোলাপ ব্যবহার করাই শ্রেয়। হলুদ রঙের গোলাপ ব্যবহারে বুঝতে হবে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পর্কের প্রতীক। তবে ওইসব রঙে আরও অনেক আবেগ অনুভূতি ও ভাষা প্রকাশ করা সম্ভব বলে মত দেন নিশা দেবী। চন্ডিগড়ের মানব কল্যাণকামী অনাথালয়ে বাহারি রঙের গোলাপ।  ছবি: বাংলানিউজ অনাথালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাগানটি যেমন আশ্রমের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করেছে ঠিক তেমনই দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ! নানারকমের গোলাপ দেখতে ও ছবি তুলতে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আশ্রমে ছুটে আসে প্রায় প্রতিদিন! আশ্রমে শিশুদের আবাস্থলের প্রবেশদ্বারে গোলাপের এ বাগান। এখানে শুধু গোলাপই নয় রয়েছে আরও বেলি, কচমচ, গাঁদাসহ নানারকমের ফুল।

আশ্রমের সদস্য সুসং ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী রুমি মালাকার বাংলানিউজকে বলেন, সৌন্দর্যের প্রতীক গোলাপ। আধুনিক রুচিশীল মানুষের পছন্দ গোলাপের ঘ্রাণ। আর সবার মতো গোলাপ আমারও প্রিয় ফুল। বাগানে নিশা দেবীসহ অন্যরা।  ছবি: বাংলানিউজময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের ছাত্র রাজিব সূত্রধর। গোলাপের বাগান দেখতে এসেছেন তিনি। রাজিব বাংলানিউজকে বলেন, ‘গোলাপ মানেই আবেগ। গোলাপ মানেই অনুভূতি। একটি মাত্র ফুল গোলাপ; যে ফুল রূপনান্দনিকতায় সব মানুষকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম। চন্ডিগড় অনাথালয়ে সত্তর রকমের গোলাপ আছে শুনে দেখতে ছুটে এসেছি। বাগান ও আশ্রম, সবমিলিয়ে অসম্ভব ভালো লেগেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।