ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শনিবার থেকে খাল পরিষ্কার করতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
শনিবার থেকে খাল পরিষ্কার করতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

ঢাকা: আগামী শনিবার থেকে ঢাকা মহানগরীর তিন খাল ও দুই বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় তারপরের দিন শনিবার থেকেই আমরা প্রাথমিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। জিরানি খাল, মান্ডা খাল ও শ্যামপুর খাল এবং পান্থপথ বক্স কালভার্ট ও সেগুন বগিচা বক্স কালভার্টের বর্জ্য অপসারণের বিশাল কর্মযজ্ঞ আমরা হাতে নিয়েছি। আগামী মার্চের মধ্যে এই তিনটি খাল ও দুটি বক্স কালভার্টের বর্জ্য অপসারণ করার কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।

মেয়র তাপস বলেন, এই তিনটি খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং বক্স কালভার্টগুলোর কী অবস্থা কাজ শুরু না করলে আমরা বুঝতে পারব না। আগামী মার্চের মধ্যে এই তিনটি খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট যদি আমরা পরিষ্কার করতে পারি তাহলে আগামী জুন নাগাদ বাকিগুলোর কাজ শুরু করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা এরইমাঝে কালুনগর খাল একদফা পরিষ্কার করেছি। বাকিটা আমরা পরিষ্কার করব। আমরা আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল ধরব, ধোলাই খালের বক্স কালভার্ট ধরব। পর্যায়ক্রমে আগামী জুন মাস নাগাদ আমরা এগুলো সব পরিষ্কার করার বিশাল কর্মযজ্ঞ আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে হাতে নিয়েছি। আমরা বসে নেই। আমরা যদি মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চাই, প্রকল্প নির্ভর কাজ করতে চাই, তাহলে দেখা যাবে আগামী দুই বছরের মধ্যে কাজ আরম্ভ করতে পারব না। এজন্য আমরা নিজ অর্থায়নে কাজগুলো আরম্ভ করছি।

বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি খালগুলোর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, খালগুলোর সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ সব দখল উচ্ছেদের পর সেই জায়গাগুলোর সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। দুটি কারণে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক— একটি হলো ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের গুরুদায়িত্ব সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর। দ্বিতীয়টি হলো, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আর ইচ্ছা ও উপায়ের সেতুবন্ধন হলো রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

খাল হস্তান্তর প্রক্রিয়া সহজ ছিল না উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, কাল থেকে মনে হবে, এটা তো খুব সহজ ছিল। এমনি এমনি হয়ে গেছে। আসলে কোনকিছুই এমনি এমনি হয় না। ৬০০ ডলার থেকে এমনি এমনি ২ হাজার ডলার মাথাপিছু আয় আমরা অর্জন করেছি, এটা এমনি এমনি সম্ভব না। তেমনি কেউ একজন বেতার কেন্দ্রে বসে— ‘আই, অন বি হাফ অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ডিক্লেয়ার দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্স অব বাংলাদেশ’। হয়ে গেল, ইন্ডিপেন্ডেন্স অব বাংলাদেশ? দীর্ঘ সংগ্রামের পথপরিক্রমা, আন্দোলন, রক্ত, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ— তারপরেই এলো স্বাধীনতা। কিন্তু আমরা পেছনেরটা ভুলে যাই। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, পেছনেরটা ভুলবেন না।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৮ সালের আগে ঢাকার খালগুলো তদারকি করতো তৎকালীন ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই খালগুলো ওয়াসার কাছে গেল তার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তাই এতদিন খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণে অনেকটা সমন্বয়হীনতা ছিল। এখন ঢাকার ২৬টি খাল ওয়াসার কাছ থেকে ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ওই দুটি সংস্থা করবে। এতে নগরে আর জলাবদ্ধতা হবে না।

অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আগে বৃষ্টি হলেই খালের পানি নেমে যেত। কিন্তু এখন বৃষ্টির কয়েক ঘণ্টা পরও রাস্তা থেকে পানি নামে না। তাই নিজ উদ্যোগে ডিএনসিসির অধীনে থাকা সবগুলো খাল তারাও (ঢাকা ওয়াসা) পরিষ্কার করেছে। তাই চলতি বছর নগরে জলাবদ্ধতা হবে না। এছাড়া এসব খালের সৌন্দর্য বাড়াতে তারাও প্রকল্প নিয়েছে।

অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা ওয়াসা এবং ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমান উল্লাহ নুরী ও ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান হস্তান্তর প্রক্রিয়া বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
আরকেআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।