ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ধরেই চক্রের সদস্যরা বিদেশি নাগরিক বা বন্ধু সেজে অনলাইনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই প্রতারণা করে আসছিলেন।
এই চক্রের কাছে প্রতারিত হওয়া এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের মানিকদি ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি টিম।
গ্রেফতার হওয়া চার প্রতারক হলেন—সাইফুল ইসলাম আরিফ (৩২), ওমর ফারুক রনি (৪০), আনিছুর রহমান (২৬) ও শহিদুল ইসলাম সোহেল (৩৬)। সিআইডি বলছে, তারা এ পর্যন্ত অন্তত ৮৮ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে।
বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তদন্তকারী সংস্থার অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভুক্তভোগীদের কাছে তারা নিজেদের বিদেশি বন্ধু বলে পরিচয় দিতেন। প্রতারিত হওয়া একজন ভুক্তভোগী আতিকুর রহমানের (৪১) দেওয়া সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী আতিকুর রহমানকে বিদেশি নাগরিকের পরিচয় দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব তৈরি করেন। এরপর বিভিন্ন উপহার হিসাবে পার্সেলে ইউএস ডলার পাঠানোর কথা বলা হয়। সেই পার্সেল বিমানবন্দরের কাস্টমসে আটকে যায় বলে জানানো হয়। এরপর চক্রের সদস্যরা নিজেদের কাস্টমসের সহযোগী অফিসার পরিচয় দিয়ে পার্সেল দেওয়ার নামে লিগালাইজেশন, ইন্টারন্যাশানাল মর্টগেজের কথা বলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দিতে বলেন। এরপর ওই টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন চক্রের সদস্যরা।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। তারা হারুন অর রশিদ কামাল, জসিম সিকদার, হৃদয় আহমেদ, মহসিন, ওসমান গণি, আয়েশা আক্তার রত্না, রেহানা আক্তার, মাহমুদুল হাছান, হালিম, কাউছার হাসানসহ অজ্ঞাত দেশি-বিদেশিসহ আরও কয়েক জনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা প্রতারিত হওয়া ভুক্তভোগী আতিকুর রহমান ছাড়াও অসংখ্য মানুষের সঙ্গে এমন প্রতারণা করে আসছিলেন। এছাড়াও আসামিরা চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে আসামিদের নামে মতিঝিল ও লালবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা দুটি মামলায় আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
এসজেএ/এমজেএফ