যশোর: তরুণ প্রজন্মের কাছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তুলে ধরতে ব্যতিক্রমী পদযাত্রা করেছেন অহিদুল ইসলাম নামে এক কলেজছাত্র। খালি পায়ে হেঁটে যশোর থেকে পৌঁছে গেছেন বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে।
রোববার (২১ মার্চ) বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে ১০১ কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষ করেছেন তিনি। যাত্রাপথে প্রতি কিলোমিটারে একজনকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ফুল, বঙ্গবন্ধুর বাণী সংবলিত কাপড় ও জাতীয় পতাকা দিয়েছেন।
অহিদুল ইসলাম যশোর শহরের খড়কি পীরবাড়ি এলাকার মৃত শহিদুল ইসলাম ও সকিনা খাতুনের ছেলে। তিনি শহরের হামিদপুর হাল হেরা ডিগ্রি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অর্নাস শেষ বর্ষের ছাত্র। এছাড়া তিনি যশোরের হতদরিদ্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এসিএস’র সদস্য। নিম্নবিত্ত সংসারের সন্তান অহিদুলকে চলতে হয় টিউশনি করে। সেই টাকা দিয়ে নিজের পড়াশোনার সঙ্গে কাজ করছে হতদরিদ্র শিশুদের নিয়ে। স্বপ্ন তার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে খাঁটি সোনায় রূপ দেওয়া। বঙ্গবন্ধুর বাণী বুকে নিয়ে কাজ করে চলেছেন বছরের পর বছর।
অহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পিতাহারা সংসারে কষ্টের মধ্যে বড় হয়েছেন তিনি। তবুও স্বপ্ন দেখেন দেশের মানুষের জন্য কিছু করা। কাজ করছেন সমাজের পিছেয়ে সব বয়সী মানুষের জন্য। সামাজিক কাজের পাশাপাশি শিশুদের ফ্রি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। কয়েক বছর ধরে চলে তার এই মানবতার কাজ। যা করে এলাকায় নজরে এসেছেন তিনি। তার এই চিন্তা ধারাকে কেউ কেউ সাধুবাদ জানালেও বিভিন্ন সময়ে শুনতে হয় কটাক্ষ অপমান। তার পরেও থেমে নেই তিনি। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে আসছে হবে তরুণদের। এমনি উপলব্ধি করে তরুণ সমাজের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তার অবদান পৌঁছে দিতে তিনি পথযাত্রা শুরু করেন। তাই ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দিনে গত ১৭ মার্চ (বুধবার) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে থেকে শুরু করেন যাত্রা। যাত্রাপথে প্রয়োজনীয় পোশাক, শুকনা খাবারসহ মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ফুল, বঙ্গবন্ধুর বাণী সংবলিত মাথার ব্যান্ডকাপড় ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা মিলে ১৫ থেকে ২০ কেজি বোঝা কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন পথযাত্রায়। প্রায় ৪ দিনের ওই যাত্রা ২১ মার্চ (রোববার) শেষ হয়েছে। এই সময়ে তিনি অতিক্রম করেন ১০১ কিলোমিটার পথ।


এই বিষয়ে সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সোনা বাংলা গড়তে কলেজ ছাত্র অহিদুল ইসলাম যে লক্ষ্যে চলেছেন আমি মনে করি তার সেই লক্ষ্যে একদিন তিনি পৌঁছে যাবেন। ছেলেটি আমার ইউনিয়ন পরিষদে দিয়ে যাওয়ার পথে আমার সঙ্গে দেখা করেন। আমি ওকে বুঝিয়েছিলাম বাড়ি চলে যেতে। কিন্তু ছেলেটি যায়নি। খালি পায়ে যশোর প্রেসক্লাব থেকে বঙ্গবন্ধুর মাজার পর্যন্ত হেঁটে গেছেন।
এসিএল ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এএফএম আনজীর বলেন, প্রায় ৪ দিনে এই যাত্রা তার যেমন কষ্ট ছিলো তেমনি আনন্দদায়ক ও শিক্ষণীয় ছিলো। ইচ্ছা থাকলে যে সফল হওয়া যায় সেটা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছেন অহিদুল। আমি দোয়া করি, অহিদুল দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
ইউজি/এএটি