খাগড়াছড়ি: মহামারি করোনা ভাইরাস গ্রাস করে নিয়েছে মানুষের দৈনদিন জীবনযাত্রা। প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা।
গেলো বছরও একই কারণে পাহাড়ে ‘বৈসাবি’ উৎসবের কোনো আয়োজন ছিলো না। ইতোমধ্যে সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনগুলো উৎসব না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘরে ঘরে পালন করা হবে দিনটি।
এর আগে জেলা প্রশাসন থেকে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
মূলত প্রতিবছর ১২ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে ‘বৈসাবি’ উৎসব শুরু হয়। সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন নামে উৎসবটি হয়ে থাকে। ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’ মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ আর চাকমাদের ‘বিজু’। তিন সম্প্রদায়ের তিন নাম নামে আদ্যক্ষর দিয়েই নামকরণ হয় ‘বৈসাবি’। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পাহাড়ে উদযাপিত হয় ঐতিহ্যবাহী ‘বৈসাবি’ উৎসব।
বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনন্ত ত্রিপুরা জানান, করোনার এমন পরিস্থিতিতে উৎসব আয়োজনের কোনো সুযোগ নেই। এবারও আমরা কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখিনি। সবাইকে ঘরে ঘরে ছোট পরিসরে দিনটি উদযাপনের জন্য বলছি। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটা জরুরি।
প্রতি বছর খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ার বটতলী নামক এলাকায় বসে মারমা জনগোষ্ঠী সাংগ্রাই উৎসবের সবচেয়ে বড় আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন। মারমা উন্নয়ন সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পানি খেলাসহ আরও নানা আয়োজন। উৎসবটি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসত। এবারও সেখানে থাকছে না উৎসবের কোনো আনুষ্ঠানিকতা।
মারমা উন্নয়ন সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংপ্রু চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে উৎসব পালনের চেয়ে নিজেরা বেঁচে থাকাটা জরুরি প্রশাসন থেকেও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আছে। আগামীতে করোনার প্রকোপ কমে গেলে আমরা দ্বিগুণ আনন্দে উৎসব আয়োজন করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২১
এএটি