খুলনা: খালের ওপর পাকা ব্রিজ থাকলেও তাতে ওঠার জন্য নেই কোনো সংযোগ সড়ক। ২৪ বছর পরও সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় বাঁশের সাঁকোই পারাপার হচ্ছেন দুই পাড়ের মানুষ।
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার গোলখালী খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটির এমন অবস্থা। ব্রিজের ওপর ঘর তুলে মোস্তফা মোড়ল নামের এক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে প্রায় ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন।
স্থানীয়রা জানান, কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের গোলখালী গ্রামে গোলখালী খালের ওপর ১৯৯৮ সালে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করেন উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর। তবে ব্রিজের দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক না হওয়ায় স্থানীয়রা ব্রিজের নিচ দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হয়ে আসছেন। এছাড়া বিশেষ বিশেষ সময়ে ব্রিজটি সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
তারা আরও জানান, ১৯৯৮ সালে ব্রিজটি নির্মাণের পর ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে আইলা, ২০১৯ সালে ফণী, বুলবুল ও সর্বশেষ ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় আশ্রয় নিয়েছিলেন এলাকার কয়েকটি পরিবার। যে কারণে ব্রিজের দুই পাড়ের মানুষ ব্রিজটির নামকরণ করেছেন বিপদের বন্ধু। ব্রিজটির ওপর স্থানীয় মোস্তফা মোড়ল নামে দরিদ্র ব্যক্তি পরিবার নিয়ে প্রায় ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন।
ব্রিজটির নির্মাণের উদ্যোক্তা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম রহিম মোড়লের ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা তৎকালীন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ নুরুল হকের মাধ্যমে এই এলাকার গোলখালী খালের ওপর ১৯৯৮ সালে ব্রিজটি নির্মাণ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে গোলখালী খাল অনেকটা ভরাট হওয়ায় ব্রিজের গুরুত্ব কমলেও মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবি শামছুর রহমান ও সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. মঞ্জুরুল আলম জানান, গোলখালী ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের সভায় বারবার উপস্থাপন করেও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী ফকরুল রহমান তালুকদার বলেন, উপজেলার মধ্যে এমন কোনো বিপদের বন্ধু নামে ব্রিজ আছে আমার জানা নেই। এছাড়া লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ যুগ আগে নির্মাণ করা ব্রিজে সংযোগ সড়ক কেন করা হয়নি, সেজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই ভালো বলতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২১
এমআরএম/এমআরএ