নীলফামারী: এ বছর গাছে গাছে ভরে গেছে সজনে। ফলে হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠছে সজনে ডাটা।
প্রথমে তরকারি জাতীয় সবজি ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হাটবাজারে এর দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সজনে ডাটা। অন্য বছরের তুলনায় এবার গাছে গাছে প্রচুর সজনে ডাটা ধরায় স্থানীয় হাটবাজারে প্রচুর আমদানি হচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ঘরের আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে প্রতিটি গাছে ঝুলছে সজিনা। সজনে গাছ অতি পরিচিত একটি নাম।
স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। এখানকার সজনে ডাটা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে। অন্য সবজির চেয়ে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় সজনে যেকোনো বয়সের মানুষ খেতে ভালোবাসে। সজিনা গাছ গ্রাম বাংলার প্রতিটি মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি নাম। প্রতি বছর শীতের শেষে এই গাছ ফুলে ফলে ভরে যায়। সজনে ডাটা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও রোগ প্রতিরোধক। তাই বছরের এই সময়টা এলে সকলেই অন্তত একদিনের জন্য হলেও সজিনার ডাটার তরকারি খেতে ভুল করে না।
চিকিৎসকদের মতে ক্যালোরিয়াম, খনিজ লবণ ও আয়রনসহ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য সজনে ডাটাতে পাওয়া যায়। এছাড়া ভিটামিন এ, বি ও সি সমৃদ্ধ সজনে ডাটা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি। প্রসূতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারি ও ফলদায়ক বলে ওষুধি সবজি হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এই গাছের ছাল ও পাতা রক্ত আমাশয় প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে বলে চিকিৎসকেরা জানায়।
নীলফামারীর জলঢাকার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক সাবে আলী বাংলানিউজকে জানান, আমার কয়েকটি সজনে গাছ রয়েছে। এতে বিনা পরিশ্রমে ও বিনা পুঁজিতে ভালো লাভ হয়।
নীলফামারীর সৈয়দপুর বাজারের সজনে বিক্রেতা আফতাব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি সজনে ৭০-৮০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে। প্রচুর আমদানি হচ্ছে তাই দাম আরও কমে আসবে।
নীলফামারী কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসিন রেজা রূপম জানান, সজনে ডাটা প্রধানত দুই প্রকার। এক প্রকার বছরে একবার পাওয়া যায়। আর রাইখঞ্জন জাতের সজনে ডাটা বছরে দুই থেকে তিনবার বাজারে পাওয়া যায়। সজনে গাছ তৈরি করতে চারা রোপণ করতে হয় না। যেকোনো পতিত জমির পুকুর পাড় রাস্তা বা বাড়ির আঙ্গিনায় বা যেনো ফাঁকা জায়গায় গাছের ডাল পুঁতে রাখলেই অবহেলা অযত্নে মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে ধীরে ধীরে এর ডাল-পালা বেড়ে গাছ বড় হতে থাকে।
এমনকি ডাল পুঁতে রাখার পর একবছরের মধ্যেই ওই সব গাছে সজনে ডাটা ধরতে শুরু করে। বড় মাঝারি এক একটি গাছে ৫-১০ মণ পর্যন্ত সজনে পাওয়া যায়। বিনা পরিশ্রমে, বিনা খরচে অধিক লাভের আশায় অনেকেই সজনে চাষের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২১
এনটি