ঢাকা, বুধবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ মার্চ ২০২৫, ১৮ রমজান ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মামুনুল হক, দিলেন সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মামুনুল হক, দিলেন সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ছাত্রদল আয়োজিত হিফজুল কোরআন ও কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল।

 

তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। পরে তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হককে প্রধান অতিথি করা হয়। অনুষ্ঠানে আগামী দিনে রাষ্ট্র ও রাজনীতি পরিচালনায় তারেক রহমানকে যেকোনো সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত বলে জানান।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিব উন নবী সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।  

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশচন্দ্র রায় সাহসসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

মামুনুল হক বলেন, রাজনৈতিকভাবে আপনারা (বিএনপি) একটা আদর্শের রাজনীতি করেন এবং আমরা আরেকটা আদর্শের রাজনীতি করি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামিক শক্তি পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। যদি ইসলামি শক্তি এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির মধ্যে বিভক্তি হয়, তাহলে বাংলাদেশ বিপন্ন হবে। বাংলাদেশবিরোধী ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার শক্তিশালী হবে।

তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক জনতার হাতে পরিচালিত হবে। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রদল নতুনভাবে সংগঠিত হবে। ধর্মের বিষয়ে আমাদের বিশেষ জ্ঞান রয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আগামী দিনে তারেক রহমানকে দেশ গঠনে রাষ্ট্র ও রাজনীতি পরিচালনায় যেকোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফেরাউন খ্যাত শেখ হাসিনাকে উৎখাতের পর ৬ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার আধা ঘণ্টা সময়ের জন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল। হাসিনার সময়ে খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছিলেন। কিন্তু সাক্ষাতে তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোনো কথাই বলেননি। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আপনাদের কথা মানুষ শোনে। আপনারা মানুষকে গিয়ে বলুন, তারা যেন দেশের সম্পদ নষ্ট না করে।  

মামুনুল হক বলেন, অনেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় বিচার করেন, এটা অনেক বড় অবিচার। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তবে এই দুটি দলের মধ্যে অনেক ঐতিহাসিক ব্যবধান রয়েছে।  

তিনি বলেন, এ দেশের রাজনীতিতে ঐতিহাসিকভাবে আমরা দুটি ধারা দেখি। একটি ধারা ব্রিটিশ আমল থেকে ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলার উত্থানকে ঠেকিয়ে দিতে চেয়েছিল, যারা মুসলিম জাতিসত্তার বিরোধী ছিল। আরেকটি ধারা ছিল পূর্ববঙ্গকেন্দ্রিক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ তথা মুসলিম জাতীয়তাবাদের ঐতিহাসিক ধারা, বিএনপি সেই ধারার প্রতিনিধিত্ব করে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কেউই ইসলামি রাজনীতি করে না, বরং তাদের ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। যেমন- আবু জাহেল ও আবু আবু তালেব- কেউই ইসলামের অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল ও আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপেন, তার চেয়ে বড় জাহেল আর কেউ হতে পারেন না। ইসলামী রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায়, আর আওয়ামী লীগ আগাগোড়া আবু জাহেলের ভূমিকায়।

অনুষ্ঠান শেষে কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় জয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
এফএইচ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।