ঢাকা, বুধবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২, ০৭ মে ২০২৫, ০৯ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

‘সুরভী’র শিশুদের ভালোবাসায় সিক্ত জোবাইদা রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:১৫, মে ৭, ২০২৫
‘সুরভী’র শিশুদের ভালোবাসায় সিক্ত জোবাইদা রহমান

ধানমন্ডির মাহবুব ভবনের গেটে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল একঝাঁক শিশু। হাতে ফুলের তোড়া, মুখে হাসি আর চোখে ছিল অপেক্ষার উত্তেজনা এবং মনে ছিল একটি প্রশ্ন—কখন আসবেন তিনি!

মঙ্গলবার (৬ মে) রাত প্রায় দশটার দিকে যখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের গাড়িটি ভবনের সামনে এসে থামল, তখন ‘সুরভী’র শিশুরা বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ল।

স্বাগতম, আপা!—চারপাশের এই সম্মিলিত স্লোগান যেন দীর্ঘ সতেরো বছরের অপেক্ষার নীরবতাকে ভেঙে দিয়ে স্পন্দিত হয়ে উঠল।

মাতৃভূমিতে জোবাইদা রহমানের প্রত্যাবর্তন
দীর্ঘ ৬ হাজার ২০০ দিন পর নিজ দেশের মাটিতে পা রাখলেন জোবাইদা রহমান। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সাথে ঢাকা ছেড়েছিলেন।

এরপর দীর্ঘ সময় কেটেছে লন্ডনে, রাষ্ট্রীয় মামলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। কিন্তু আজ, অসুস্থ মায়ের টানে সব প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ফিরে এসেছেন প্রিয় শহরে।

বিমানবন্দর থেকে সরাসরি দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে পৌঁছান জোবাইদা রহমান। এরপর তার প্রথম গন্তব্য ছিল পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতাল। সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে যখন তিনি মায়ের কেবিনে প্রবেশ করেন, তখন আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর মুহূর্তে দুই প্রজন্মের ভালোবাসা যেন নীরব ভাষায় একে অপরের হৃদয়ে মিশে গেল। ‘মা, আমি ফিরেছি’—এই ছোট্ট উচ্চারণে যেন ভেসে গেল দীর্ঘ বিরহের বেদনা।

সুরভীর শিশুদের সাথে হৃদয়ের বন্ধন
মায়ের সাথে সাক্ষাতের পর ডা. জোবাইদা রহমানের পরবর্তী গন্তব্য ছিল ধানমন্ডির মাহবুব ভবন। এই বাড়িতে রয়েছে তার অসংখ্য স্মৃতি। রাতে যখন তিনি তার বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের স্মৃতিধন্য এই ভবনে পৌঁছান, তখন এক উষ্ণ অভ্যর্থনা অপেক্ষা করছিল তাঁর জন্য। ভবনের গেটে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল তার মায়ের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ‘সুরভী’র শিশুরা।

সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ১৯৭৯ সালে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার মহান উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘সুরভী’। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৪৬ বছরে এই প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে প্রায় আটাশ লাখ শিশু সাক্ষরতার সুযোগ পেয়েছে।  

সন্ধ্যায় যখন জোবাইদা রহমান ভবনটিতে পৌঁছান, ‘সুরভী’র বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা তাকে প্রাণঢালা অভ্যর্থনা জানায়। তাদের নিষ্পাপ মুখের হাসি আর ভালোবাসার উষ্ণতায় জোবাইদা রহমান যেন ফিরে পেলেন তার ফেলে আসা শিকড়ের স্পর্শ। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের পর এই আন্তরিক অভ্যর্থনা নিঃসন্দেহে তার হৃদয়ে এক গভীর ছাপ ফেলেছে।

ইএসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।