কুড়িগ্রাম: ক্লাসের ভাঙা ছাদ থেকে প্রায়ই পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের পলেস্তারা পড়ে গিয়ে রড বেরিয়ে গেছে।
বিদ্যালয়টির এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় অভিভাবকেরা তাদের কোমলমতি শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন। এদিকে বিদ্যালয়টির একমাত্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
সরেজমিনে রোববার (৪ মে) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির জরাজীর্ণ চার কক্ষের ভবনের একটিতে বিদ্যালয়ের কার্যালয় আর তিনটিতে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ভাঙা ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে আছে। বৃষ্টির পানি পড়ে দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেছে। কক্ষের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও বিমে ফাটল ধরেছে। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় আড়াইশ কোমলমতি শিশু পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সুভারকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০১ সালে ছয় কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে এ ভবনের চারটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও একটি কক্ষ বিদ্যালয়ের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অনেক জায়গায় দেয়াল, পিলার ও বিমে ফাটল। খসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থীকে পাঁচজন শিক্ষক পড়াচ্ছেন।
এ বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
আনিছুর রহমান নামের এক অভিভাবক বলেন, এই বিদ্যালয়ে আমার সন্তান পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের ভবন এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের নতুন ভবন করা হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম জানায়, ক্লাসে ছাদের পলেস্তারা খুলে আমাদের গায়ে পড়ে। অনেক ভয় লাগে। আকাশে মেঘ দেখলেই বাবা-মা স্কুলে আসতে দিতে চান না।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক খন্দকার তানজিনা মমতাজ জানান, আমার স্কুলে ২৬৪ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে শিক্ষকরা পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। এটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কারো কাম্য নয়। ভবন ভেঙে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তখন এর দায়কে নেবে।
তিনি আরও বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলে তারা শুধু দীর্ঘদিন থেকে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়ের ভবনটি আসলে ঝুঁকিপূর্ণ আমি জানি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।
ইউএনও সাঈদা পারভীন জানান, নতুন একটি ভবনের বরাদ্দ এসেছে। সেই ভবনের জন্য দুইটি বিদ্যালয় আবেদন করেছে। ইঞ্জিনিয়াররা সার্ভে করে প্রতিবেদন দিলে ব্যবস্থা নেবো।
এএটি