বান্দরবান: পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের কাছে তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদে বান্দরবানে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
রোববার (১১ মে) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ বান্দরবান পার্বত্য জেলা শাখার আয়োজনে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ইউপিডিএফের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের শুরুতে ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমা তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা সংবিধান পরিপন্থি।
এসময় বক্তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ইউপিডিএফ অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। আর সেই দলটিকে এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দলটির অন্যতম নেতা মাইকেল চাকমা, যার নামে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখন গণতান্ত্রিক শাসনের কথা বলছেন।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, এমনিতেও ১৯০০ সালের ব্রিটিশ শাসনবিধি বাতিল না হওয়ায় বাঙালিরা ভূমি গ্রহণের অধিকারসহ নানান মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত পাহাড়ি সংগঠনগুলোর গুলিতে এক হাজারের বেশি সেনা সদস্যসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এছাড়া হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি নিরাপরাধ পাহাড়ি-বাঙালি। এ অঞ্চলে যদি স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়, তাহলে তা নিহত ও আহত সাধারণ জনগণের সঙ্গে উপহাস করার সামিল হবে।
এসময় বক্তারা এসময় সরকারের প্রতি পাঁচটি দাবি জানান। এগুলো হলো- ইউপিডিএফ ও জেএসএসের হাতে পাহাড়ের নিপীড়িত, নির্যাতিত, আহত ও নিহতদের স্বজনদের পক্ষে (১) ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফসহ পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, (২) দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্তু লারমা, দেবাশীষ রায়সহ পাহাড়ি ‘সন্ত্রাসী’দের সব গডফাদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, (৩) অখণ্ডতা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে পাহাড়ে সেনাক্যাম্প বৃদ্ধি করা, পুলিশ ও এপিবিএনকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি দিয়ে সেনাক্যাম্পের পাশাপাশি কিছু পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা, (৪) সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে বেশ কিছু বিজিবির বিওপি স্থাপন করা এবং (৫) পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিল করে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি আসিফ ইকবাল, সিনিয়র সহ-সভাপতি জমির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসআই