শহীদ তাজউদ্দিন উডেন ফ্লোর জিমনেসিয়াম বরাবরই আলোচনায় নানান সমস্যার কারণে। এই স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন এবং টেবিল টেনিস খেলা হয়।
১৫-১৯ মে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ছিল। পরে ২২ তারিখ থেকে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডারেশন। এই সময়ের মধ্যে ভেন্যুর এসির সমস্যা সমাধান হবে না। গরমের মধ্যে খেলতে হবে তাদের। এই বিষয়ে টেবিল টেনিসের তারকা খেলোয়াড় সোনাম সুলতানা সোমা বলেন, ‘আজকে প্র্যাকটিসের জন্য গেলাম…আসলে দম নিতে পারছিলাম না… আসলে ১০ মিনিট, ১৫ মিনিট প্র্যাকটিস করে দম নিতে পারছি না; এখানে কীভাবে টুর্নামেন্ট খেলব। ’
টেবিল টেনিসের নতুন এডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান সনেট দশ দিতে চাইলেন না কারোই। নতুন কমিটি হওয়ার পর সবকিছু দেখভালের পর্যাপ্ত সময় পাননি বলে জানালেন তিনি। সনেট বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর রোজা গেল, ঈদ গেল, এনএসসিকে জানানোর সে অর্থে সময় হয়নি। এখন নতুন একটা এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেম করতে হবে। এখন আমরা এনএসসিকে যদি দায় দেই সেটি ঠিক হবে না, আবার আমাদেরকে যদি আপনারা ব্লেম দেন সেটিও ভুল হবে। এটা আসলে ঘটনাচক্রে ঘটনা ঘটে গেছে। ’
খেলোয়াড়দের ইচ্ছায়ই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাকসুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন টুর্নামেন্ট হয়নি। এখন খেলোয়াড়েরা চায় যে পরিবেশেই হোক টুর্নামেন্টটা চলুক। এখন আমরা ২২ মে টুর্নামেন্ট শুরু করতে যাচ্ছি। প্লেয়াররা মরিয়া হয়ে গেছে খেলতে। ’
ভেন্যু নিয়ে অসন্তোষ সমার কন্ঠে। তিনি বলেন, ‘হতাশা যদি বলেন টোটালি হতাশ। এসির এই সমস্যাটা আজকে থেকে না, এসি দিতে বললেই অনেক অজুহাত আসে। এই সমস্যা, সেই সমস্যা, যে সারতে আসবে তাকে দুই হাজার আড়াই হাজার টাকা দিতে হয়, অনেক সময় তাকেও খুজে পাওয়া যায় না। দুইটা ডিসিপ্লিনের ( টেবিল টেনিস - ব্যাডমিন্টন) খেলাই তো একটা ভেন্যুতে হয়, সাফার তো আমরাই করছি, তাই না, খেলি তো আমরাই, খুবই দুঃখজনক। ’
‘ফ্লোরের ব্যাপারটা তো জানেন। সেটা তিন কোটি টাকা দিয়ে নাকি ঠিক করল, কিন্তু সেটা এখন অনেক জায়গায় ভেঙে যাচ্ছে, এখন শুনছি ১২ কোটি টাকা দিয়ে এসি রিপেয়ারিং করা লাগবে। তো খুবি দুঃখজনক, খুবই হতাশাজনক আমাদের জন্য। ’-যোগ করেন তিনি।
অন্য কোনো ভেন্যুতে আয়োজন করা যেতো কিনা এই টুর্নামেন্ট? এমন প্রশ্নের জবাবে সোমা বলেন, ‘অন্য কোনো ভেন্যু পাবে কি না সেটি আমি জানি না। তবে আমি এসব বিষয়ে হতাশ। এটা তো একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। আমাদের ইন্টারন্যাশনার টুর্নামেন্ট আছে, আমাদের কোচেচ ট্রেনিং হওয়ার কথা (লেভেল-১), তো সব কিছুই তো হোল্ড হয়ে থাকবে, সব কিছুর সঙ্গেই তো সবকিছু লিঙ্ক আপ। ’
ক্রিকেট-ফুটবল বাদে অন্য খেলাগুলো সঠিক মূল্যায়ন পায়না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সোমা। তার মতে সঠিক মূল্যায়ন পেলে এই ডিসিপ্লিন থেকে দেশ ভালো কিছু পেতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমার তো সব সময় মনে হয়েই আসছে, ক্রিকেট-ফুটবল ছাড়া বাংলাদেশে স্পোর্টস নেই মনে হয়! আমরা যারা খেলছি, ভালোবাসার জায়গা থেকে, আর কিছুটা আর্থিক বিষয়ের জন্য খেলে। সবাই আবার পায় না, টিমও নাই, তারপরও খেলছে। সব ফোকাসই তো ক্রিকেটে; স্পোর্টস রিলেটেড যারাই আছেন তাদের সবারই তো ফোকাস ক্রিকেটে, আমাদের ছোট ইভেন্ট গোনার বাইরে। ইন্টারন্যাশনার ইভেন্ট খেলতে গেলে এটা অনুভব করি। একটু সহায়তা পেলে আমার মনে হয় অনেক ভালো করতাম। ’
সাবেক তারকা খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনুও আমি শুতে বলেন, ‘আমি তো এখনও সবকিছু পুরোপুরি জানি না, যে কারণে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। একটা এসি নষ্ট, সেটা কেউ দেখবে না জানবে না, এটা তো ঠিক না। প্লেয়ারদের কাছ থেকে ভালো কিছু পেতে তাদেরও তো সাপোর্ট দিতে হবে। টুর্নামেন্ট স্থগিত কেন হয়েছে এটা আমি বলতে পারব না, তবে যথাসময়ে হলে ভালো হতো। ’
‘সবসময় দেখা গেছে বড় ইভেন্টগুলো নিয়ে সবার আগ্রহ থাকে। ইভেন স্পনসরগুলোও বাণিজ্যের চিন্তা করে। এ কারণে প্লেয়াররা ঝরে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে সরকার সংশ্লিষ্ট সবাইকে বুঝতে হবে। আমার কাছে মনে হয় ছোট ছোট ডিসিপ্লিনে নজর দিলে আরও বেশি ভালো ফল আসতে পারে। ’-যোগ করেন তিনি।
উডেন ফ্লোরের এসি মেরামতের বিষয়ে দায় এড়াননি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া স্থাপনাগুলো নির্মাণ করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি), রক্ষণাবেক্ষণও করে এনএসসি, তো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপরিই দায় দাযিত্বগুলো আসবে, এখানে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই, এটিই সত্য। ’
‘এটা মোটেও সমীচীন হয় নাই। এই কাজে ক্রীড়া পরিষদের যারা প্রকৌশলী যারা আছে তাদের জবাবদিহিদায় আসতে হবে। ’- যোগ করেন তিনি
এআর