ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে দুর্বার আন্দোলন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে দুর্বার আন্দোলন’

চট্টগ্রাম: আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের নেতারা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুশিয়ারি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। বৈষম্য, দমন-পীড়ন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনে তরুণ প্রজন্ম তাদের অসাধারণ সাহস ও নেতৃত্বের গুণাবলী প্রদর্শন করেছে।

দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমান সরকার এমন একসময় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে যখন দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এবং বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ।

তবে, নতুন স্বপ্ন ও আশার সঞ্চার হয়েছে এই পরিবর্তনের মাধ্যমে। দেশজুড়ে তরুণরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, লুটপাট হওয়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার, বাজার নিয়ন্ত্রণ-এমন নানা উদ্যোগে তরুণদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতারই প্রমাণ।

তরুণদের অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, দেশজুড়ে তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, লুটপাট হওয়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার, বাজার নিয়ন্ত্রণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে।

এসময় সাম্প্রতিক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বৈছাআ’র নেতারা বেশ কিছু দাবি ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তাদের দাবি ও পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য একটি ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধান পুনর্গঠন। অর্থনীতি পুনর্গঠন ও লুণ্ঠিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং তরুণদের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক রিজাউর রহমান বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী,দুর্নীতিমূক্ত একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে জনতাকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। আমরা যে সম্ভানার কথা চিন্তা করে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলাম। সে স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে বুকে লালন করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামীতেও দেশের জন্য কাজ করতে চাই।  ঐক্যবদ্ধ সে স্বপ্নের কথা চট্টগ্রামবাসীর কাছে তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন, মুখ্য সংগঠক তাওসিফ ইমরোজ, মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা, উত্তর জেলা আহ্বায়ক ইয়াছির আরফিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক জোবাইর হোসেন, মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব রাশেদুল আলম, মহানগর যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ফরহাদ বিন হাবিব ইমন, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব মো. রইছ উদ্দিন ও তৌহিদুল ইসলাম। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর জেলা এবং দক্ষিণ জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।