ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন কখনও আত্মসমর্পণ করবে না: জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
ইউক্রেন কখনও আত্মসমর্পণ করবে না: জেলেনস্কি

সমস্ত প্রতিকূলতার বিপরীতে ইউক্রেনের পতন হয়নি। হবেও না।

ইউক্রেন কখনও আত্মসমর্পণও করবে না। লড়াইয়ে আমরা রাশিয়াকে পরাজিত করেছি।

ওপরের কথাগুলো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে তিনি কথাগুলো বলেন। তার ভাষণের সঙ্গে নিজের ভাষ্য যোগ করে ‘পুতিনের নিষ্ঠুর যুদ্ধের বিরুদ্ধে কিয়েভ কখনও একা দাঁড়াবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক আগ্রাসনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন জেলেনস্কি। তার এ সফরকে ঐতিহাসিক বলে বিবেচিত হচ্ছে।

সফরের অংশ হিসেবে বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনীর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন জীবিত এবং লাথি মারছে। এ সময় তিনি মার্কিন কংগ্রেসে প্রতিশ্রুতি দেন, তার দেশ রাশিয়ার কাছে কখনও আত্মসমর্পণ করবে না।

তিনি আরও বলেন, ইউএস কংগ্রেসে থাকা এবং এখানে দাঁড়িয়ে সকল মার্কিনিদের সঙ্গে কথা বলা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। সমস্ত ধ্বংস ও অন্ধকারের পরিস্থিতিতে কিয়েভের পতন হয়নি। এ সময় তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় করতালিতে স্বাগত জানান কংগ্রেসের আইন প্রণেতারা।

বক্তব্য দেওয়ার সময় মার্কিন আইন প্রণেতাদের সামনে ইউক্রেনের পতাকা উপস্থাপন করেন জেলেনস্কি। পতাকায় পূর্ব ইউক্রেনের বাখমু শহরের সামনের সারির যোদ্ধাদের সই  রয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে শহরটিতে রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনারা।

কংগ্রেসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এমন সময় বক্তব্য দিলেন, যখন মার্কিন আইন প্রণেতারা ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন সরকারি ব্যয় প্যাকেজ পাস করার জন্য কাজ করছেন। এবং এতে ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৪৫ বিলিয়ন সামরিক ও মানবিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

খবরে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনকে ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করবে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও।

জেলেনস্কি কংগ্রেসের সদস্যদের জানান, আসছে বছর দুই দেশের সংঘাতে একটি টার্নিং পয়েন্ট আসতে পারে। কারণ, ইউক্রেনীয়দের সাহস ও যুক্তরাষ্ট্রের সংকল্প জন সাধারণের স্বাধীনতার গ্যারান্টি দেবে।

ইংরেজিতে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ১০ দফা শান্তি পরিকল্পনার সমর্থন করেন। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেও ইউক্রেনীয়রা বড়দিন উদযাপন করবে। এ সময় হয়ত বিদ্যুৎ থাকবে না। তবে আমি নিশ্চিত আমাদের বিশ্বাসের আলো নিভে যাবে না।

তিনি মার্কিন নেতৃবৃন্দ ও দেশটির নাগরিকদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। যুদ্ধের অবসান ঘটাতে গিয়ে কোনো আপস করা হবে না বলেও সবাইকে প্রতিশ্রুতি দেন জেলেনস্কি।

জেলেনস্কির ভাষণের পর বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় ইউক্রেনকে কখনও একা ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমেরিকান জনগণ ও বিশ্বের জন্য সরাসরি আপনার বক্তব্য শোনা গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনের লড়াই ও এ সংক্রান্ত ব্যাপারে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো কোনো দেশ সফর করছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিও সফর করছেন।

কংগ্রেসে দেওয়া তার ভাষণকে অনুপ্রেরণামূলক বলে মন্তব্য করেছেন সিনেটের নেতা মিচ ম্যাককনেল। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত হতে হবে। এক্ষেত্রে সবাই আমরা এক।

তার আগে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন জেলেনস্কি ও বাইডেন। এ সময় নিজের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে ইউক্রেনের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যুদ্ধ জয়ে সময় যতক্ষণ প্রয়োজন আমরা আপনার সঙ্গে আছি। পুরো যুক্তরাষ্ট্র; ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান সবাই জানে রাশিয়াকে থামানোটা কেন জরুরি।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।