ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩২, ১৫ মে ২০২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, সন্দেহ ‘শত্রু রাষ্ট্রের’ দিকে 

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২১, মে ১৪, ২০২৫
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, সন্দেহ ‘শত্রু রাষ্ট্রের’ দিকে 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি বাড়ি এবং একটি গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে সন্ত্রাসবিরোধী ব্রিটিশ পুলিশ। এই হামলার পেছনে কোনো শত্রু রাষ্ট্রের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার (১২ মে) ভোরে লন্ডনের কেনটিশ টাউন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ব্যক্তিগত বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। আগুনে বাড়িটির প্রবেশদ্বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কেউ আহত হননি বলে জানিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এই ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে ২১ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ড। সন্দেহ করা হচ্ছে, তিনি স্টারমারের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি বাড়ি এবং একটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার সঙ্গে জড়িত।

জানা গেছে, প্রথম হামলাটি হয়েছিল একটি গাড়িতে। গাড়িটি এক সময় কিয়ার স্টারমার ব্যবহার করতেন নির্বাচনের পর তিনি গাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় হামলার লক্ষ্য ছিল একটি ফ্ল্যাট, যেখানে ১৯৯০-এর দশকে তিনি বসবাস করতেন। সোমবার ভোরে তৃতীয় হামলাটি হয় তার পারিবারিক বাড়িতে, যেখানে বর্তমানে তার শ্যালিকা থাকেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এসব ঘটনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তারা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে সম্ভাব্য মোটিভ হিসেবে তারা সন্ত্রাসবাদ, উগ্র-বাম বা উগ্র-ডান চরমপন্থা, কিংবা ইসলামপন্থী জঙ্গি তৎপরতাও খতিয়ে দেখছে। তারা এটিও খতিয়ে দেখছে যে এই হামলাগুলোর সঙ্গে কোনো শত্রু রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা।

ডাউনিং স্ট্রিট থেকেও জানানো হয়েছে, শত্রু রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা তারা উড়িয়ে দিচ্ছে না, তবে তদন্ত চলার কারণে বিস্তারিত মন্তব্য করতে তারা রাজি নয়।

ব্রিটিশ পুলিশ বলছে, একই ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি বাড়ি এবং একটি গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত কিনা, সেটিই এখন প্রধান অনুসন্ধানের বিষয়।

পুলিশ আরও বলছে, এই ধরনের ঘটনা অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। আমরা এমপিদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেই এবং যেকোনো উদ্বিগ্ন এমপি যেন তাদের স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ম্যাট জুকস সতর্ক করেছিলেন যে, রাশিয়া এবং ইরানের মতো শত্রু রাষ্ট্রগুলোর সম্পৃক্ততার অপরাধ তদন্তের সংখ্যা গত কয়েক বছরে চারগুণ বেড়েছে।

স্টারমারের বাড়িতে হামলার দিনেই যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ছয়জন বুলগেরিয়ান নাগরিককে রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রাশিয়াকে অতীতে লন্ডনে ইউক্রেনীয় মালিকানাধীন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাতেও সন্দেহ করা হয়েছিল।

এদিকে চলতি মাসের শুরুতে লন্ডনে ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলার ষড়যন্ত্রের সন্দেহে আটক চার ইরানি নাগরিক এখনো পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

এই সিরিজ আগুনের ঘটনার পর ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং সরকারী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

সূত্র: টেলিগ্রাফ

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ