ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘আমরা ভাবিনি আমেরিকা কোনো দেশের অতিথিকেও হত্যা করতে পারে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
‘আমরা ভাবিনি আমেরিকা কোনো দেশের অতিথিকেও হত্যা করতে পারে’ ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদে নিহত হয়েছেন ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি জেনারেল কাসেম সোলেমানি। তিনি ছিলেন ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার এবং বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের প্রধান। ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সোচ্চার ছিলেন সোলেমানি।

ইরানিদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। গত ২ জানুয়ারি দিনগত রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়।

এ হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ‘যুদ্ধের সূচনা’ হিসেবে দেখছে ইরান সরকার।

এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসীদের গুরু’ তা আমরা জানতাম। কিন্তু আমরা ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি তারা অন্য দেশের অতিথিকে লক্ষ্য করে হামলা চালাবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সেরা কমান্ডার’ ছিলেন শহীদ জেনারেল সোলেমানি। এর সমুচিত জবাব দিতেই ইরাকে মার্কিনিদের আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় আমাদের সেনাবাহিনী।

রুহানি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ যদি মার্কিনিদের বিতাড়িত করার চেষ্টা করে, সেটি হবে সোলেমানির মৃত্যুর অন্যতম প্রতিদান।

অপরদিকে ট্রাম্প বলেছেন, সোলেমানিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে, তিনি মার্কিন দূত ও সেনা কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ছক কষছিলেন। তার আগেই আমরা তাকে সরাতে সক্ষম হয়েছি।

তবে সোলেমানি এ ধরনের হামলার ছক কষছিলেন, এমন কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি মার্কিন সরকার।  

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারও একই কথা জানান। তিনি বলেন, ইরানি জেনারেল মার্কিন দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তার মৃত্যুর পর ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি জানান, তারই আমন্ত্রণে ইরাকে গিয়েছিলেন সোলেমানি। ইরান, ইরাক ও সৌদি আরবের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমন করতে একটি শান্তিপূর্ণ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন তিনি।

সোলেমানির ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে মাহদি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলা ইরানের বিরুদ্ধে ‘আক্রমণাত্মক’ এবং দেশের সার্বভৌমত্বের ভয়াবহ অবমাননা।

২ জানুয়ারির হামলায় সোলেমানিসহ নিহত হয়েছিলেন ৯ জন। নিহতদের মধ্যে সোলেমানি ছাড়াও ছিলেন পিপল’স মোবালাইজেশন ইউনিটের (পিএমইউ) উপ-প্রধান আবু মাহদি আল-মুহান্দিস এবং দলটির মুখপাত্র মোহাম্মেদ আল-জাবেরি। পিএমইউ মিলিশিয়ারা ইরাকের সামরিক বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত।  

তবে মার্কিন সরকার মনে করে, পিএমইউ মিলিশিয়ারা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের ‘একটু বেশিই ঘনিষ্ঠ’। এ ফোর্সেরই নেতৃত্বে ছিলেন সোলেমানি। প্রধানমন্ত্রী মাহদি বলেন, সোলেমানি ও আল-মুহান্দিস দু’জন শহীদ, যারা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন।

গত ৬ জানুয়ারি ইরাকি সংসদে ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ইরাক থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করা হবে। এ সিদ্ধান্তের পরও দেশটিতে নিযুক্ত পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা সরাতে অস্বীকৃতি জানায় যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি, ‘মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভালো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।