গুগলের ক্লাউড সেবা—বিশেষ করে ইসরায়েলের 'প্রজেক্ট নিম্বাস'-এর সঙ্গে যুক্ত প্রযুক্তি— সহিংস সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনে ভূমিকা রাখছে কি না, তা নিয়ে স্বাধীন তদন্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি ভোটভুটি হতে যাচ্ছে। ৬ জুন বার্ষিক সাধারণ সভায় গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে এই ভোটভুটির কথা রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রজেক্ট নিম্বাস হলো একটি ১.২ বিলিয়ন ডলারের ক্লাউড কম্পিউটিং প্রকল্প, যা গুগল ও অ্যামাজন ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করছে। এটি ইসরায়েলি সরকারি দপ্তর ও সামরিক বাহিনী জন্য উন্নত প্রযুক্তি সেবা সরবরাহ করে। সমালোচকদের মতে, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নজরদারি ও দমন-পীড়নে ব্যবহৃত হতে পারে।
ইহুদি অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো অ্যালফাবেটের শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, তারা যেন প্রজেক্ট নিম্বাস নিয়ে তদন্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ভোটভুটির এই প্রস্তাবটিই বাতিল করেন।
প্রস্তাবটির কড়া সমালোচনা করেছেন অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগ (এডিএল)-এর প্রধান জোনাথন গ্রিনব্লাট।
তিনি বলেন, মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ দেখানোর নামে এটা আসলে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার খর্বের একটি প্রচেষ্টা, যা বিডিএস (বয়কট, ডিভেস্টমেন্ট ও স্যাংকশন) আন্দোলনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
অ্যালফাবেটের বোর্ডও প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে এবং শেয়ারহোল্ডারদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
ইহুদি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জে-লেন্স বলছে, এই প্রস্তাবে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘প্রজেক্ট নিম্বাস’-কে শুধুই সামরিক প্রকল্প হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, অথচ এটি ইসরায়েলের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক খাত ও পরিবহনসহ অসংখ্য বেসামরিক খাতেও ব্যবহৃত হয়।
জে-লেন্স এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরি হফনুং বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের বোঝা উচিত, এটি আসলে করপোরেট গভার্ন্যান্স ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রচেষ্টা।
জে-লেন্স ইতোমধ্যে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে, প্রজেক্ট নিম্বাস নিয়ে কর্মীদের প্রতিবাদের জেরে গুগল ২৮ কর্মীকে বরখাস্ত করেছিল, যা নিয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা হয়। এছাড়া ইসরায়েলি সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ‘উইজ’ অধিগ্রহণ করার পরও গুগল ক্লাউড-এর সিইও থমাস কুরিয়ানের বিরুদ্ধে বিডিএস-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর ক্ষোভ তৈরি হয়।
এমএম