ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুপুরে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে রাতে চলে গেলেন দুরন্তের মা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
দুপুরে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে রাতে চলে গেলেন দুরন্তের মা

ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা দুরন্ত বিপ্লবের রহস্যজনক মৃত্যুর বিচার চেয়েছিলেন তার মা রোকেয়া আক্তার (৭০)। কিন্তু সে বিচার তিনি দেখে যেতে পারেননি।

শনিবার (২৭ মে) রাতে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।

জানা গেছে, শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ছেলে হত্যার বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন রোকেয়া আক্তার। রাত দেড়টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথে তার মৃত্যু হয়।

রোববার (২৮ মে) রোকেয়ার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন তার মেয়ে শাশ্বতী বিপ্লব। তিনি দুরন্ত বিপ্লবের ছোট বোন।

শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, দুরন্ত আমার মায়ের প্রথম সন্তান। তাকে হারিয়ে মা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন। পাশাপাশি আমরা মৃত্যুর সঠিক তদন্তের জন্য দুই মাস ধরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কোনো সহায়তা পাচ্ছিলাম না। এই বিষয়টা নিয়েও মা অনেক কষ্ট পেতেন। গতকাল আমরা ‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ একটি সংকলন প্রকাশ ও হত্যার বিচারের দাবিতে ডিআরইউতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করি। সেখানে মা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের পর তিনি অসুস্থতা বোধ করেন। পরে তাকে বাসায় আনা হলে রাত একটার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে শাশ্বতী বলেন, বারডেম হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এর আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ছেলের হত্যার বিচার দাবির সময় রোকেয়া বলেছিলেন, দুরন্তকে তার সার্কেলের লোকজন যাদের সাথে চলাফেরা করত এদের মধ্যে কেউ না কেউ কারও স্বার্থে আঘাত লেগেছে তাই তাকে হত্যা করে। কিন্তু ও পানিতে ডুবে মরে নাই। এটা আমি কোনোদিন স্বীকার করব না। আর আমার হাহাকার আমার ভেতরে থাকবে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন মসজিদে জানাজা শেষে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দুরন্ত বিপ্লবের পাশেই রোকেয়া আক্তারকে দাফন করা হবে।

গত নভেম্বরে মর্নিং সান-৫ নামে একটি লঞ্চের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লব (৫১) নিহত হন। পরিবার তখনই সন্দেহ করে তিনি খুন হয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একাধিক সূত্র একটি পত্রিকার কাছে নৌকাডুবিতেই দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে।

পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাফিন মাহমুদও বলেন, নৌকাডুবিতেই দুরন্ত বিপ্লব মারা গেছেন। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরহাদ। দুরন্ত বিপ্লবের ময়নাতদন্ত শেষে তিনি জানান, নিহতের মাথায় ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছিল। মাথার পেছনে প্লেন কোনো সারফেস দিয়ে আঘাত করার আলামত পেয়েছিলেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।