ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আশ্রয়ণের ঘরে তরুণীর সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা, ধরে ফেলল জনতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৩
আশ্রয়ণের ঘরে তরুণীর সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা, ধরে ফেলল জনতা

সিরাজগঞ্জ: গভীররাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুফলভোগী এক তরুণীর (১৮) ঘরে ঢুকে জনতার হাতে ধরা পড়েছেন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া।  

এতো রাতে ওই তরুণীর ঘরে তিনি কেন গিয়েছিলেন, তা নিয়ে পুরো চৌহালী জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

 

মঙ্গলবার (৩০ মে) গভীররাতে ঘটনাটি ঘটে চৌহালী উপজেলার খাস কাউলিয়া ইউনিয়নের কুরকী গ্রামের আশ্রয়ণের ঘরে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চৌহালীতে কর্মরত পিআইও মজনু মিয়া একজন লম্পট। তিনি আশ্রয়ণের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রের অভিযোগ, খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের কুরকী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের সময় পিআইও মজনু মিয়ার সঙ্গে হতদরিদ্র একটি পরিবারের সদস্যদের পরিচয় হয়। আশ্রয়ণের ঘর দেওয়ার কথা বলে ওই বাড়ির ১৭/১৮ বছর বয়সী এক তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর  থেকে তিনি ওই বাড়িতে মাঝে মধ্যে যাতায়াত করতেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরও পায় পরিবারটি।  

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওই তরুণীর ঘরে ঢোকেন মজনু মিয়া। টের পেয়ে স্থানীয় জনগণ তাকে আটক করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ইউএনওকে ফোন দেন মজনু মিয়া। পরে ইউএনও আনসার সদস্য পাঠিয়ে রাত ২টার দিকে তাকে উদ্ধার করেন।  

খাসকাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম গণি মোল্লা বলেন, পিআইও মজনু দীর্ঘদিন ধরে চৌহালীতে পিআইও’র দায়িত্বে রয়েছেন। তার স্বভাবই হলো আশ্রয়ণের ঘর দেওয়ার নামে সুফলভোগী পরিবারের তরুণীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করা। চৌহালীতে প্রায় ৫০ জন নারীর সঙ্গে তিনি এমনটা করেছেন। মজনু মঙ্গলবার রাতে এক বাড়িতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। স্থানীয় মাতব্বর টাকা-পয়সা খেয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন। ওই মেয়েটিকেও টাকা দেওয়া হয়েছে, যে কারণে মেয়েটিও অভিযোগ দিচ্ছেন না।  

খাস কাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ বিদ্যুৎ বলেন, আমি গ্রামের মানুষের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের প্রশ্ন ছিল, পিআইও এতো রাতে এখানে এসেছেন কেন? অপ্রীতিকর অবস্থায় তাকে পাওয়া গেছে কিনা সেটা জানার চেষ্টা করি। কিন্তু এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কেউ কিছু বলতে পারেননি। তবে স্থানীয়রা বলেন, ওই তরুণীর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন পিআইও। তারপর লোকজন তাকে আটক করেন। পিআইওর সঙ্গে যে তরুণীকে নিয়ে কথা হচ্ছে, তার কাছে জানতে চাইলে তিনি পুরো ঘটনাই অস্বীকার করেন।  

চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ আরও বলেন, অভিযোগ না থাকলে আমরা শক্ত হতে পারি না।  

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, গভীররাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে এলাকায় কিছু উত্তেজিত জনতা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আনসার সদস্যদের পাঠিয়ে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে আনা হয়। পরে আনসার অফিসারসহ পিআইও সাহেব আমার এখানে আসেন। এটুকুই আমি জানি, এর বাইরে কিছু জানা নেই। আর এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি।  

এ বিষয়ে জানতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।  

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, পিআইও বা ইউএনও কেউই বিষয়টি আমাকে জানাননি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৩

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।