ঢাকা, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

জুলাই আন্দোলন: ববির অনলাইন সভার ভিডিও ভাইরাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
জুলাই আন্দোলন: ববির অনলাইন সভার ভিডিও ভাইরাল

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের একটি গোপন অনলাইন সভার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ওই মিটিংয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় শিক্ষক অংশ নেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন প্রক্টর ড. আব্দুল কাইয়ুম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল বাতেন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তারেক মাহমুদ আবির এবং বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শফিউল আলম।

সভায় শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি তার বক্তব্যে বারবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বারবার দাঁড়ানোর কথা বলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে আহ্বানও জানান।

আবার এ সভায় জুলাই আন্দোলনকালীন নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সমর্থনে বিবৃতি দেওয়া নিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন। অথচ এ শিক্ষককে সম্প্রতি একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সদস্য থেকে বাদ দেওয়া হয়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদের পদত্যাগের দাবি ওঠে। ওই প্রেক্ষাপটে ববির তৎকালীন উপাচার্য ২০ আগস্ট পদত্যাগ করেন। তবে, ভিডিওতে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বহাল রয়েছেন, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী সামাজিক মাধ্যমে লিখেন, “স্বৈরাচার গেছে, কিন্তু তার চৌদ্দগুষ্টি এখনও ক্যাম্পাসে রয়ে গেছে। ”

আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, “এই ভিডিও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চরম লজ্জার বিষয়। ”

বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক ও সংগঠনগুলো পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা।

তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমানকে একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন, যিনি আগে একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিতর্কিত হয়েছিলেন। এছাড়াও, মেয়াদ শেষ হলেও নিময়নীতির তোয়াক্কা না করে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে স্বপদে বহাল রাখার অভিযোগ রয়েছে বর্তমান উপচার্যের বিরুদ্ধে।

ছাত্রদের অভিযোগ, তৎকালীন আন্দোলন দমনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা কিছু শিক্ষককে উপাচার্য সিন্ডিকেটসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের দাবি, প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করছে এবং মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
এমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।