ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৫ মে ২০২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

দুই অনলাইন শাড়ি ব্যবসায়ীর জামদানি লুট, গ্রেপ্তার ৪

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৫, মে ১৫, ২০২৫
দুই অনলাইন শাড়ি ব্যবসায়ীর জামদানি লুট, গ্রেপ্তার ৪ শাড়ী ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করে গ্রেপ্তার ৪ জন

ঢাকা: প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে দুই অনলাইন শাড়ি ব্যবসায়ী হারিয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ৩১টি জামদানি শাড়ি। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর দক্ষিণখান থানা পুলিশ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযানে তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১টি জামদানি শাড়ি।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বুধবার (১৪ মে) দক্ষিণখান থানাধীন কসাইবাড়ী হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন— মেহেদী হাসান শাওন (২৪), মো. আশরাফুল (২১), সাব্বির হোসেন রিমন (২৫) ও মো. সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৫)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ১১টি জামদানি শাড়ির আনুমানিক মূল্য দুই লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

দক্ষিণখান থানা সূত্র জানায়, গত ১২ মে বিকেলে জামদানি শাড়ি বিক্রির উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ঢাকার দক্ষিণখান মোল্লারটেক কসাইবাড়ী এলাকায় আসেন দুই ভাই—নুর মোহাম্মদ রাব্বি (২৪) ও তার বড় ভাই ছহিম (৩৫)। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “Jamdani Gram–জামদানী গ্রাম” নামে একটি অনলাইন পেইজের মাধ্যমে জামদানি শাড়ি বিক্রি করতেন।

রাব্বি জানান, হোয়াটসঅ্যাপে এক অজ্ঞাতনামা নারী ক্রেতার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। নারী ক্রেতা তার বোনের বিয়ের জন্য ৭-৮টি শাড়ি কিনতে চান বলে জানান এবং শাড়িগুলো যাচাই করে নেওয়ার কথা বলেন। এ সময় ২০-২৫টি জামদানি শাড়ি সঙ্গে এনে দক্ষিণখানের বটতলায় দেখা করতে বলেন তিনি।

সরল বিশ্বাসে দুই ভাই ১২ মে বিকেলে মোট ৩১টি জামদানি শাড়ি নিয়ে নির্ধারিত স্থানে আসেন। সেখানে পৌঁছে নারী ক্রেতাকে ফোন করলে তিনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন। প্রায় ৩০ মিনিট পর চারজন পুরুষ এসে নিজেদের সেই নারীর পরিচিত বলে পরিচয় দেন এবং এক অন্ধকার গলির ভিতরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় সন্দেহ হওয়ায় রাব্বি শাড়িগুলো নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

কিন্তু পথে আবার সেই নারী ফোন করে বলেন, তিনি এখন কসাইবাড়ী এলাকার কানাডা প্লাজার সামনে আছেন এবং সেখান থেকেই শাড়িগুলো কিনে নেবেন। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে দুই ভাই সেখানে পৌঁছালে ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাদের উপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাঠিপেটা করে ৩১টি জামদানি শাড়ির মধ্যে ১৯টি ছিনিয়ে নেয়, যার মূল্য প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ রাব্বি বুধবারই দক্ষিণখান থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চার অভিযুক্তকে শনাক্ত করে এবং বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, এই প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে প্রতারণা ও ছিনতাই করে আসছিল। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন, বাকি শাড়িগুলো উদ্ধারে অভিযানও অব্যাহত আছে।

এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।