মাছের আড়তে মাস্ক ছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতা। ছবি: মাহমুদ হোসেন
সিলেট: বসন্তে অশান্ত মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে আর ঘরে বসে নেই।
পর্যটনকেন্দ্র, বিপণিবিতান, রাস্তাঘাট এবং হাট-বাজারে বাড়ছে মানুষের ঢল। চৈত্রের গরমে তাপমাত্রা বাড়ায় করোনার প্রভাব কমবে! এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে অসচেতন মানুষের মুখে জনসমাগমস্থলে নেই মাস্ক। মাছ বাজার থেকে অভিজাত বিপণিবিতান-সবখানেই সচেতনতার অভাব। আর করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েই অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাফেরা করায় আক্রান্ত হওয়ার নজির রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় সিলেটে আবারও বাড়ছে করোনার প্রকোপ। এসব কারণে সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। হাসপাতালে বাড়ছে করোনারোগী। বাড়ছে মৃত্যুও।
অথচ যুক্তরাজ্যে পাওয়া 'এন৫০১ওয়াই' করোনার নতুন স্ট্রেইন ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে সিলেটেও। করোনার নতুন ধরনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে শাবিপ্রবিতে গবেষণায় মিলেছে আরও ৩০ ধরনের করোনা ভাইরাসের সন্ধান। এসব ভাইরাসের ৬টি ধরনের অস্থিত্ব সিলেটে পাওয়া গেছে। যা বিশ্বের আর কোথাও মিলেনি। এসব কারণে যুক্তরাজ্য থেকে আসা ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের দেশে আসার পরই এক সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কিন্তু তারপরও মানুষের মধ্যে নেই সচেতনতা। যে কারণে করোনার ভয়াবহতার দিকে এগোচ্ছে সিলেট।
শীত মৌসুমে করোনা আক্রান্তে লাগাম টেনে ধরা গেলেও তাপমাত্রা বাড়ার প্রাক্কালে করোনা আবারও ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেটের কাজিরবাজার মৎস্য আড়তে ওপরে ‘নো-মাস্ক, নো এন্ট্রি’ সাইনবোর্ড থাকলেও জনসমাগমস্থলে অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। এ নিয়ে বাজার কর্তৃপক্ষেরও কোনো মাথা ব্যাথা নেই। এছাড়া জাফলংসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকমুখর থাকলেও মানুষের মাস্কবিহীন চলাফেরায় সচেতনার অভাব দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, এক সপ্তাহের সিলেটে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭২ জন। মারা গেছেন দুই জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন একজন।
শনিবার (২০ মার্চ) পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বছরের ১০ মার্চ থেকে এ যাবত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৬৭৭ জন। বিপরীতে সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৮৭৬ জন। আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮০ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে সিলেট জেলার ২১৭ জন, সুনামগঞ্জে ২৬ জন, হবিগঞ্জে ১৬ জন এবং মৌলভীবাজারের ২২ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালকের দায়িত্বে থাকা ডা. আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নির্দেশনা দিলেও লোকজন সচেতন হচ্ছেন না। যে কারণে সিলেটে করোনার প্রভাব বাড়ছে।
গত এক সপ্তাহে দেড় শতাধিক আক্রান্ত ও দুই জনের মৃত্যু আমাদের জন্য অশনি সংকেত। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
এনইউ/এএটি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।